বিদায়ী শিক্ষাবর্ষে আড়াই মাস বিদ্যাভ্যাসের অভিজ্ঞতায় শিক্ষার্থীরা চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে অটো প্রমোশন পায়। নতুন ক্লাসে ওঠা শিক্ষার্থীদের সাথে ৫৪৪ দিন বিদ্যাপীঠের কোন সম্পর্ক ছিল না। দীর্ঘ বন্ধের পর রোব ও সোমবার পঞ্চম শ্রেণীর প্রতিদিন ৩টি বিষয়ের ক্লাশ হচ্ছে। এর মধ্যে পিএসসির প্রস্তুতির আভাস এসেছে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পিএসসি পরীক্ষার জন্য খুলনা জেলায় ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী প্রস্তুতি নিচ্ছে। নভেম্বরের শেষ অথবা ডিসেম্বরে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সর্বশেষ ঘন্টা বাজে গেল বছরের ১৬ মার্চ। এর পর পরীক্ষা ছাড়াই ১টি শিক্ষাবর্ষ শেষ হয়েছে। অটো পাশে নতুন ক্লাসে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। নতুন ক্লাসে ওঠার পর বিদ্যাপীঠে পাঠগ্রহণ করার সুযোগ হয়নি। মহামারী করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় ভার্চুয়াল ক্লাস হয় মাঝে মধ্যে। সরকারি নির্দেশনায় রোববার থেকে ক্লাস শুরু হয়েছে। গত দু’দিনে বাংলা, ইংরেজী, গণিত এবং আগামীকাল মঙ্গলবার বাংলা ও গণিতের পাশাপাশি বিজ্ঞান বিষয়ের ক্লাস হবে। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পঞ্চম শ্রেণীতে প্রতিদিন তিনটি করে বিষয়ের ক্লাস চলবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এএসএম সিরাজোদ্দোহা এ প্রসঙ্গে বলেন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পিএসসি পরীক্ষার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বাংলা, ইংরেজী, গণিত, ধর্ম, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় এবং প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গেল বছরের পরীক্ষার্থী ছিল ৩৭ হাজার ৮শ ১৬ জন, এবারের পরীক্ষার্থী ৩৫ হাজার, ৬শ ৫২ জন। অন্যান্য বছরে ২০নভেম্বর পিএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবার নভেম্বরের শেষ অথবা ডিসেম্বরের প্রথম দিকে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। জেলার এক হাজার একশ ৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রোববার ৭০ শতাংশ এবং সোমবার ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। ৯টি বিদ্যাপীঠের নতুন ভবন হওয়ায় পাশ্ববর্তি স্কুলে তাদের ক্লাস হচ্ছে।
সিএন্ডবি কলোনী আদর্শ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা এলিজা পারভিন তথ্য দিয়েছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বিদ্যাভ্যাষ করেছে। তাদের দেওয়া এ্যাসাইনমেন্ট অনুাযায়ী ওয়ার্কশীট জমা দিয়েছে। দীর্ঘ বন্ধের পর শিক্ষার্থীরা পাঠ্যপুস্তকের যেসব অধ্যায়ে বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে তাদের ঘাটতি পূরণ করানোর চেষ্টা চলছে। তিনি জানান এবারের পিএসসিতে ৫৬জন অংশ নেবে, গতবারে এর সংখ্যা ছিল ৫৮জন।
চারাবাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা পলি পাল জানান, চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণীর ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যাভ্যাস না করলেও শিক্ষার্থীরা লেখপড়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি। সরকারি নির্দেশনায় নভেম্বরে পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থীরা যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের অংশ নিতে পারবে।
উদয়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুল ইসলাম তথ্য দিয়েছেন। গত দু’দিনে আনন্দ উৎসাহের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যাপীঠে আসে। আজ দ্বিতীয় শ্রেণীর ক্লাসের প্রথম দিনে ৩৪ জনের মধ্যে ১৭ জনের উপস্থিতি ছিল। এ বিদ্যাপীঠের সহকারি শিক্ষক শুক্লা কর্মকার বলেছেন, দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ জড়তা কাজ করছে। কারণ তাদের বিদ্যাপীঠের শিক্ষাজীবন এই প্রথম। তিনি দ্বিতীয় শ্রেণীতে প্রার্থনা নামক কবিতা পড়িয়েছেন।
পিটিআই পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপুল মন্ডল এ প্রতিবেদককে জানান, সোমবার প্রথম শিফটের শিক্ষার্থী উপস্থিতির সংখ্যা ৭৬ শতাংশ। শতভাগ শিক্ষক উপস্থিত হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণীতে আজ এ বিদ্যাপীঠের সহকারি শিক্ষক রেহেনা পারভিন কাপ অব টি, সালাদ ও স্যান্ডুইজ তৈরির বিষয়ে পাঠদান করেছেন।
এ প্রতিষ্ঠানের সহকারি শিক্ষক বলেন, ৪৫ মিনিটের দ্বিতীয় শ্রেণীর ক্লাশে প্রার্থনা কবিতা পড়িয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম