খুলনার আলোচিত ধর্ষণ মামলার আসামি ও সাবেক রেলওয়ে পুলিশ পরিদর্শক উছমান গনি পাঠানকে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর রোববার উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করলে মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা খাতুন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী আবুল কালাম আজাদ।
আদালত সূত্র ও মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ভিকটিম ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার যশোরে ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। পরেরদিন যশোর থেকে ট্রেনে করে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ট্রেনে ওঠার পর টয়লেট থেকে বের হওয়ার পর একজন নারী পুলিশসহ আরও দুইজন পুলিশ তাকে কোন কিছু না বলে আটক করে। ওই সময় উপস্থিত নারী পুলিশ তাকে চড় মারে। এতে তার বাম চোখ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
দুপুরের দিকে ট্রেন খুলনায় পৌছালে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। এ সময় ভুক্তভোগী ওই নারীর সাথে কন্যা সন্তান ছিল। রাতে পুলিশ পরিদর্শক উছমান গনি থানায় আসলে আটক হওয়া নারী বলেন, আমার কাছে পুলিশ কোন কিছু পায়নি তবে কেন আমাকে আটক রাখা হয়েছে? তখর গারদ থেকে বের তাকে অফিস রুমে নেওয়া হয়। পুলিশ কর্মকর্তা অন্যান্য পুলিশ সদস্যকে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিতে বলে।
এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে থাকে এবং এক সময়ে তাকে ফ্লোরে ফেলে দেয়। পরে চিৎকার করলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
রাত একটার দিকে আবারও থানায় আসেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। রেলওয়ে থানার এক ডিউটি অফিসার রাতে চোখ বেধে তাকে ওসির রুমে দিয়ে আসেন। ওড়না দিয়ে মুখ বাধা হয়। যেন চিৎকার করতে না পারে। চোখের বাধন খোলার পর পরিদর্শক উছমান তাকে বলতে থাকে কোথায় লেগেছে। এরপর ওই নারীকে ধর্ষণ করেন খুলনা জিআরপি থানা পুলিশ পরিদর্শক উছমান গনি পাঠান। ৪৫ মিনিট ধরে তার ওপর চলে পাশবিক নির্যাতন। মামলার হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। এ ঘটনায় ভিকটিম খুলনা রেলওয়ে থানার পুলিশ পরিদর্শকসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্যের নামে রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন, যার নং ৩, তারিখ ৯/৮/২০১৯।
এ ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় হলে তদন্তে মাঠে নামেন রেলওয়ে সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ আহমেদ। ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি উছমান গনির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। তবে অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
খুলনা গেজেট/ আ হ আ