করোনাভাইরাসের টিকার নিবন্ধন, কার্ড প্রিন্ট এবং টিকাকেন্দ্রে যাতায়াত করার জন্য খুলনার ৬৫ শতাংশ মানুষের অর্থ খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
টিকা কেন্দ্রে অপর্যাপ্ত বুথ ও কর্মীর স্বল্পতা, সামাজিক দূরত্ব না মানা, বসার অপর্যাপ্ত স্থান, দীর্ঘ সিরিয়াল এবং সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় টিকাগ্রহীতারা ভোগান্তিতেও পড়েছেন বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। টিআইবি পরিচালিত কমিউনিটি মনিটরিং প্রতিবেদনে খুলনায় করোনা টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) খুলনা নগরীর স্কুল হেলথ ক্লিনিকের সম্মেলন কক্ষে টিআইবির প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। মনিটরিং কার্যক্রম থেকে প্রাপ্ত ফলাফল ও সুপারিশ উপস্থাপন করেন টিআইবির ক্লাস্টার কো-অর্ডিনেটর মো. ফিরোজ উদ্দীন।
ফিরোজ উদ্দীন জানান, গত ১২ থেকে ১৪ ডিসেম্বর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টিকা কেন্দ্রে ওই মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করে টিআইবির সহযোগী প্রতিষ্ঠান সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)। এ সময় ওই কেন্দ্রের ৭৫ জন বুথ ফেরত টিকা গ্রহীতার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এছাড়া প্রান্তিক পর্যায়ে টিকার ব্যাপারে জানতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ১৫ জন প্রতিনিধির সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ খুব কম ছিল। ৯৩.২ শতাংশ মানুষ টিকা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতেন। টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা ছিল ৮৬.৫ শতাংশ মানুষের। কোন কোম্পানির টিকা গ্রহণ করা হচ্ছে সে সম্পর্কে ৫৫.৮১ শতাংশ মানুষের ধারণা ছিল। তবে করোনার টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। দলিত, বেদে, মুচি, হরিজন সম্প্রদায়ের অর্ধেক মানুষ টিকা গ্রহণ করেছেন।
টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি বলেও টিআইবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। টিআইবির ওই প্রতিবেদনে টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ন্যায্যতা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে ১২ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন উপস্থাপন ও মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মো. মনজুরুল মুরশিদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. মনজুরুল মুরশিদ বলেন, অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও করোনায় আক্রান্ত সব মানুষকে সাধ্যমতো সেবা দিতে চেষ্টা করা হয়েছে। টিকা প্রদান কার্যক্রমে ধারাবাহিকভাবে টিকা পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে সফলভাবে কার্যক্রমটি পরিচালনা করা হয়েছে। এরপরও টিআইবি যেসব সুপারিশ করেছে সেগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।
খুলনা গেজেট/এএ