করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে টিকাকেন্দ্রে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। যেখানে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা তো দূরের কথা, অনেকের মুখে মাস্কও দেখা যায়নি। সংবাদকর্মীদের দেখে স্বেচ্ছাসেবকদের মাইকিং করতে দেখা যায়। অনেকেই টিকাকেন্দ্রের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
খুলনার পাঁচটি কেন্দ্রে চলছে করোনার টিকাদান কর্মসূচী। প্রত্যেকটা সেন্টারে সকাল নয়টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত টিকাদান চলে। এই সময়ের মধ্যে ৮শ’ জনকে তাদের সেবা প্রদান করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুখে সামজিক দূরত্ব ও বিধি-নিষেধের কথা বললেও বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র।
শনিবার সরেজমিনে খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা টিকাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সামাজিক দূরত্বের কোন বালাই নেই। একে অপরের গায়ের সাথে লেগে লাইনে দাড়িয়ে রয়েছে। কিছু সংখ্যক মানুষের মুখে মাস্ক থাকলেও অধিকাংশের মুখে ছিল না। টিকাকেন্দ্রে টিকা দিতে আসা মানুষকে যে কক্ষে বসতে দেওয়া হচ্ছে সেখানে ভিড় দেখা গেছে। অথচ যে কোন ধরনের ভিড় ও জনসমাগম করোনার এই উর্ধ্বগতির সময় নিষিদ্ধ করার কথা বারবার বলছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
টিকা দিতে আসা করোনায় আক্রান্ত রোগী আবুল হোসেন জাহিদুর রহমান সড়কের বাসিন্দা জানান, এখানকার পরিবেশ মোটেও ভাল না। গাদাগাদি করে লাইনে দাড়াতে হয়। যেখানে টিকা দেওয়া হচ্ছে সেখানে একই অবস্থা। এখান থেকে যদি আমরা সংক্রমিত হয়ে বাড়ি যাই তাহলে আর কেউ রক্ষা পাবে না।
নিয়ামত হোসেনও জানালেন একই কথা। বিশৃঙ্খল পরিবেশে সংক্রমণের হার কখনো কমানো সম্ভব হবে না। আমরা এখান থেকে আক্রান্ত হয়ে যেখানে যাব সেখানে এর সংক্রমণ ঘটবে। তিনি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে হাসপাতাল কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এস এম মুরাদ হোসেন জানান, আমরা চেষ্টা করছি। মানুষ যদি সচেতন না হয় তাহলে আমরা করব কী। তাছাড়া স্থান স্বল্পতার কারণে হাসপাতালে প্রতিদিন এতো মানুষের গাদাগাদি হচ্ছে।
এদিকে খুলনা জেলায় আজ (শনিবার) পাঁচ হাজার ৬৭ জন করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। যার মধ্যে পুরুষ দুই হাজার সাতশত ৪৮ এবং মহিলা দুই হাজার তিনশত ১৯ জন। আজ খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দুই হাজার তিনশত ২০ জন এবং নয়টি উপজেলায় মোট দুই হাজার সাতশত ৪৭ জন করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। উপজেলাগুলোর মধ্যে দাকোপ দুইশত ৪০ জন, বটিয়াঘাটায় একশত ৮৪ জন, দিঘলিয়া দুইশত ৬২ জন, ডুমুরিয়া চারশত জন, ফুলতলা একশত চার জন, কয়রা আটশত ৬৩ জন, পাইকগাছা দুইশত ৪৬ জন, রূপসা দুইশত ৫২ জন এবং তেরখাদায় একশত ৯৬ জন টিকা গ্রহণ করেছেন। এছাড়া আজ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০ জন করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেন। খুলনা সিভিল সার্জন দপ্তর থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসকল তথ্য জানানো হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই