খুলনায় আবারও বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। থেমে নেই মুরগীও। একদিনের ব্যবধানে বেড়েছে ডিমের দামও। উর্ধ্বমূখী মাছের বাজার। তবে গত একবছর ধরে স্থির হয়ে আছে খাসির মাংসের দাম।
নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে, প্রতিকেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা গত ১৫ দিন আগেও ৫৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত দু’দিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি ব্রয়লার ও কক মুরগীর দাম ২০ টাকা বেড়ে ১৫০ ও ২৪০ টাকা এবং সোনালি ১০ টাকা বেড়ে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি ডিমে ২ টাকা বেড়ে ৩৮ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিকেজি ভেড়ার মাংস ৭২০ টাকা ও খাসির মাংস সাড়ে আটশ’টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা মো: মশিউর রহমান বলেন, গেল বছরের শেষ দিনে বাড়ানো হয় দাম। সে সময়ে প্রতিকেজি মাংস ৫৮০ টাকা করে বিক্রি করা হয়। পরবর্তীতে হাটে গরুর চাহিদা বেশী থাকায় দাম বেড়ে যায়। তাছাড়া সরাইখানায় গরু জবাই করতে ‘এখন একটু বেশীই দিতে হয়’। দেশে গরু উৎপাদনের পরিমাণ কমে গেছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতেও বেড়েছে মাংসের দাম। মাছের দাম বৃদ্ধিতে মানুষ মাংসের দিকে ঝুঁকছে বেশী। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় স্বাভাবিকভাবে বেড়ে চলেছে মাংসের দাম।
জোড়াকল বাজারের মুরগী ব্যবসায়ী মো: শাকিল হোসেন বলেন, কোন কথা ছাড়াই দু’দিন ধরে মুরগীর দাম ১০ থেকে ২০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি জানান, মুরগীর বাচ্চা ও খাবারে দাম বেড়েছে। তাই ফার্ম মালিকরা দাম বাড়িয়েছে। আমাদের বেশী দামে ক্রয় করে এ দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার ১৫০ টাকা, কক ২৪০ টাকা ও সোনালি ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে তার দোকানে।
বাগেরহাট জেলার খাজুরা গ্রামের মুরগীর ব্যবসায়ী মো: বদরুল বলেন, মুরগীর বাচ্চার দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবস্তায় খাবারের দাম এক থেকে দেড়শ’ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। লাগামছাড়া সব জিনিষের দাম বেড়েছে। দাম বৃদ্ধি না করে বাচার কোন উপায় নেই।
ডিম এখন প্রতি হালি ৩৮ টাকা। প্রতিপিচ নয় টাকার ওপরে। দোলখোলার মুদি দোকানী সবুজ বলেন, গতকাল রাত থেকে এ দাম নির্ধারণ করা হয়। বেশী দমে ক্রয় করে তাকে এ দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। না হলে লস গুনতে হবে।
নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজারের মাছ বিক্রেতা রেজাউল ফকির জানান, অনাবৃষ্টির কারণে খাল বিল শুকিয়ে গেছে। এ কারণে মোকামগুলোতে মাছের আমদানি খুব কম। মাছের চেয়ে মোকামগুলোতে ব্যাপারীর সংখ্যা বেশী থাকে আর এ সুযোগে আড়ত মালিকরা দাম বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে বাজারে মাছের দাম বেশী। আরও দু’মাস মাছের দাম এরকম থাকতে পারে। তবে বৃষ্টি হলে মাছের দাম কমে যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নগরীর শান্তিধাম মোড়ে খাসির মাংস বিক্রেতা চান মিয়া বলেন, দেশে ছাগল লালন পালনের পরিমাণ কমে গেছে। পশু-পাখির খাবারের দাম অস্বাভাবিক আকারে বেড়ে গেছে। অনেকে ছাগলের খামার ছেড়ে দিয়েছে। যা আছে তা দিয়ে নগরবাসীর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। তাছাড়া ছাগলের চামড়ার কোন মূল্য নেই। অন্যদিকে পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে। তাছাড়া সরাইখানায় ছাগল জবাই দিতে আগে যেখানে ২৫ টাকা দিতে হতো এখন সেখানে ৫০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। বর্তমানে তিনি ভেড়ার মাংস ৭২০ ও খাসির মাংস ৮৫০ টাকায় বিক্রি করছেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই