উমেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মিলিত নারী অধিকার ফোরামের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের বিশিষ্ট নারী নেত্রী জাকিয়া আক্তার হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন নারী নেত্রী অজন্তা দাস ও মেরীনা যুথি।
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট নাগরিক নেতা এড. কুদরত-ই-খুদা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান রুনু ইকবাল বিথার। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, নারী নেত্রী রেহেনা আক্তার, রোজী রহমান, সংগঠনের সমন্বয়কারী এড, তছলিমা খাতুন ছন্দা, সুতপা বেদজ্ঞ, ভারতী ঘোষ, এড. সন্ধ্যা গাইন, নাগরিক নেতা আফজাল হোসেন রাজু, উন্নয়ন কর্মী কাজী খালিদ পাশা জয়, এড. পপি ব্যানার্জী, অধ্যাপক রমা রহমান, রুমা নন্দী, আলমাস আরা, আফরোজা রোজী, কাজী আফরোজা কালাম, ইসরাত আরা হিরা, আফরোজা বেগম, আমেনা সুলতানা, নাসিমা আক্তার পলি, রত্না আলম, শাহনাজ ইসলাম, ফাহামিদা ইসলাম, সাহানা পারভীন, আলিমা আক্তার চাঁদনি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বিভিন্ন ধর্মীয় আইনের মধ্য দিয়ে নারীরা সামাজিক অধিকার, সম্পদের অধিকার, সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশ সংবিধানে নারীকে আইনের দৃষ্টিতে সমান অধিকার দেয়ার কথা বলা হয়েছে। সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ৩১ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে। ২৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ নারী-পুরুষ ভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না। একই অনুচ্ছেদে ২(এ) বলা হয়েছে, রাষ্ট্র ও গণজীবনে সর্বস্তরে নারী-পুরুষ সমান অধিকার লাভ করবে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন নেই।
১৯৬১ সালে এতিম শিশুদের সম্পত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে শরিয়া আইনের পরিবর্তন করা হয়েছে। আইন হচ্ছে সমাজকে এগিয়ে নেয়ার জন্য। হিন্দুধর্মে এক সময়ে সতীদাহ প্রথা ছিল সেটা বন্ধ হয়েছে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিধবা বিবাহ আইনের বাস্তবায়নের জন্য সংগ্রাম করেছেন। ১৯৬১ সালে মুসলিম পারিববারিক আইন কার্যকর হওয়ার আগে স্ত্রীদের প্রতি তিন তালাক শব্দের উচ্চারণের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যেত। তাদের সামাজিক কোনো নিরাপত্তা ছিল না। তারা দেনমোহর বা ভরণ-পোষণ কিছুই পেত না। কিন্তু আজ তার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। হিন্দুধর্মে মৃতের সম্পত্তিতে স্ত্রী ও কন্যার স্বত্ব বা অধিকার নেই। হিন্দু আইন অনুযায়ী হিন্দু নারীরা জীবনস্বত্ত্বা পান। কিন্তু কোনো নারী তা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন না।
বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়েরা যাতে পিতার সম্পত্তিতে সমান অধিকার পায় সে লক্ষ্যে ২০১০ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংশোধনের প্রস্তাব করেছিল আইন কমিশন। কমিশন বলছে উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তিতে পুত্রের সাথে কন্যাকেও পূর্ণ ও সমান অধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সেটির আজও কোনো অগ্রগতি হয়নি। বক্তারা আরও বলেন, এখন সময় এসেছে হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টানদের জন্য এক ও অভিন্ন পারিবারিক আইন এবং আদালতে সেটা কার্যকরী করা।সূত্র : প্রেস রিলিজ।
খুলনা গেজেট/কেএম