করোনাভাইরাসের কারণে আসন্ন শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়গুলোতে সব শ্রেণিতেই লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে আরও দুই সপ্তাহ আগে। এখন ১৫ ডিসেম্বর থেকে খুলনা মহানগরীর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য আবেদনপত্র বিতরণ করতে চায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। শুধু অনলাইনে (https://gsa.teletalk.com.bd) আবেদন করা যাবে।
মহামারী করোনার কারণে এবার বিদ্যালয় থেকে কোনো ভর্তি ফরম বিতরণ করা হবে না। ৩০ ডিসেম্বর অনলাইনে লটারির মাধ্যমে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ২০২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির এ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও খুলনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ফারহানা নাজ খুলনা গেজেটকে বলেন, মন্ত্রণালয় ভর্তির জন্য একটি দিন ধার্য্য করেছে। তবে খুলনা মহানগরীর বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষার্থী বাছাই করতে লটারির প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু শিক্ষার্থী নির্বাচনের জন্য নির্ধারীত তারিখ এখনো ধার্য্য করা হয়নি। ভর্তি কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে নীতিমালা অনুসারে দিন ধার্য্য করা হবে। লটারির কাজটি হবে সফটওয়্যার ব্যবহার করে অনলাইনে।
ফারহানা বলেন, মহানগরীতে অবস্থিত ১০টি সরকারি বিদ্যালয়ে এবার তৃতীয় ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। অন্যান্য শ্রেণির শূণ্য আসনের সংখ্যা দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তবে ভর্তির আবেদনের বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত নির্দেশনা পায়নি। নির্দেশনা পেলেই নীতিমালা অনুসারে কার্যক্রম আরম্ভ করা হবে।
শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, নীতিমালা অনুযায়ী মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই সবাইকে সময়সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় জানিয়ে দেওয়া হবে। তখন বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোও কীভাবে নিজস্ব ব্যবস্থায় আবেদনপত্র বিতরণ ও লটারির কাজটি করবে, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে খুলনার বাইরের সরকারি বিদ্যালয়গুলোর বিষয়েও দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে।
জানা গেছে, মহানগরীতে অবস্থিত ১০টি বিদ্যালয়ে তৃতীয়, ষষ্ঠ এবং নবম শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিবেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত বছর স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীর আসন সংখ্যার বিপরীতে ভর্তির আবেদন পড়েছিল প্রায় ছয়গুণ। পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত সংখ্যক আসনে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়েছিল। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘প্রাত ও দিবা’ মিলে দুটি শাখা রয়েছে। খুলনার এই বিদ্যালয়গুলোতে তৃতীয় থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত আসন আছে প্রায় ১ হাজার ৬৭৭ টি।
গত ২৫ নভেম্বর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মণি জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে আসন্ন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিদ্যালয়গুলোতে প্রথম শ্রেণির মতো সব শ্রেণিতেই লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। তিনি বলেন, এত দিন সারা দেশের স্কুলগুলোয় প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলেও দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে। আর নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলের (জিপিএ) ভিত্তিতে। কিন্তু করোনার কারণে এ বছর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা হচ্ছে না। তাই নবম শ্রেণিতেও জেএসসি ও জেডিসির ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ নেই।
খুলনা গেজেট / এআর