প্রতিদিনই অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে খুলনার বাতাস। গত ডিসেম্বর মাস থেকে বাতাসে ক্ষতিকর বস্তুকনা বেড়েছে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুন বেশি। বেড়েছে ওজন এবং সালফার ডাই অক্সাইডের মতো ক্ষতিকর উপাদান। বাতাসে বস্তুকনার পরিমাণ বাড়লে অল্পতেই মানুষ কাশি ও অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়। ওজনসহ বাতাসে এসব উপাদান বেশি থাকায় কাঁশি, হাপানিসহ মানুষের ফুসফুস সংক্রমণ বাড়ে।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খুলনার বাতাস ছিলো পুরোপুরি অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসের ২২ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত বাতাস ছিলো মারাত্মক অস্থাস্থ্যকর।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান যে শতভাগ সঠিক তা বোঝা যায় নগরীতে চলাচলের সময়। নগরীর অধিকাংশ সড়ক এখন ধুলোয় ধূসর। মাত্রাতিরিক্ত ধুলোবালির কারণে জোড়াগেট, আহসান আহমেদ রোড, শামসুর রহমান রোড, বিআইডিসি রোড, খানজাহান আলী সড়ক, শিপইয়ার্ড রোড, মুজগুন্নী মহাসড়ক, বাস টার্মিনাল থেকে বয়রা, নতুন রাস্তা, বাস টার্মিনাল সংযোগ সড়ক এড়িয়ে চলে মানুষ। করোনা সংক্রমণ কমলেও ধুলাবালুর কারণে সড়কে মাস্ক ব্যবহার এখন অনেকটা বাধ্যতামূলক। কিছু কিছু সড়কে মুখে মাস্ক লাগিয়ে চলাচল করাও এখন কষ্টকর।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংস্কারহীন সড়ক, অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণকাজ, উন্মুক্তস্থানে ইট-বালুর ব্যবসা, খোলা ট্রাকে বালুসহ নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন, মেয়াদোত্তীর্ণ মোটরযান থেকে নির্গত বিষাক্ত ভারী ধাতুই দূষণের মাত্রা বাড়াচ্ছে। ঘরের বাইরে তো বটেই, বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ ও খেলার মাঠেও ভর করছে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়ছে নগরবাসী, বিশেষ করে শিশুরা। এসব সড়কের আশপাশের বাসিন্দারা শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে ভুগছে নানা সমস্যায়।
পরিবেশ অধিদপ্তর খুলনার সিনিয়র কেমিস্ট তানভীর হায়দার বলেন, নির্মাণ কাজের ধুলাবালুর কারণে বস্তুকনা বাতাসে বাড়ছে। আর পরিবহন থেকে নির্গত ধোয়া, জ্বালানি থেকে বাড়ছে সালফার ডাই অক্সাইড। ওজনসহ বাতাসে এসব উপাদান বেশি থাকায় কাঁশি, হাপানিসহ মানুষের ফুসফুস সংক্রমণ বাড়ে।
কেসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. স্বপন কুমার হালদার বলেন, বাতাসে বস্তুকনার পরিমাণ বাড়লে অল্পতেই মানুষ কাশি ও অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়। বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় প্রকোপ বাড়ে। স্বাস্থ্যকর শহরের পরবর্তী সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হবে এবং কমার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।