ভারতের অন্ধপ্রদেশ থেকে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে ভোমরা বন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচের প্রথম চালান গত সোমবার নগরীর ট্রাক টার্মিনাল পাইকারি বাজারে এসে পৌঁছেছে। গত তিনদিনে ২১শ’ বস্তা কাঁচা মরিচ বাজারে আমদানি হয়েছে। ভিন্ন দেশীয় মরিচ আসার পর থেকে স্থানীয় বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে।
জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে দক্ষিণ অঞ্চলের চারদিনের বৃষ্টিতে গড়ে ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। অতিবৃষ্টির ফলে কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, যশোর, খুলনার ফুলতলা ও ডুমুরিয়ার অধিকাংশ কাঁচা মরিচ গাছ মারা যায়। আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে স্থানীয় বাজারগুলোতে মরিচের সংকট দেখা দেয়। অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা মেটানোর জন্যে ভারত ও বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যস্ততায় সে দেশের অন্ধপ্রদেশ থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমোদন হয়।
আমদানিকারকদের অনুকূলে পারমিট ইস্যু করা হয়েছে। সোমবার সাতক্ষীরার ভোমরা শুল্ক স্টেশন দিয়ে জিকে এন্টারপ্রাইজ প্রথম দফায় কাঁচা মরিচ আমদানি করে। এরপর মঙ্গলবার ও বুধবার বিএইচ ট্রেডিং এন্ড কোং, সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজ ও গোল্ডেন এন্টারপ্রাইজ মঙ্গল ও বুধবারে খুলনার ট্রাক টার্মিনাল বাজারে আমদানি করে।
খুলনার ট্রাক টার্মিনালের কাঁচা বাজারের আড়ৎদার পাকশী বাণিজ্য ভান্ডারের মালিক সেকেন্দার আলী বুলু জানান, এ বাজারের ১০টি আড়তে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হয়েছে। তিন দিন আগ থেকে সংকট কাটতে শুরু করে। সোমবার প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের পাইকারি মূল্য ১১৫ টাকা থাকলেও বুধবারের মূল্য কেজি প্রতি ৯০ টাকা।
তিনি জানান, গত বছর কোরবানীর আগ থেকে ৬ মাস যাবত ভারতীয় কাঁচা মরিচ অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা মেটায়। জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে এখানকার পাইকারি আড়তে প্রতি কেজির মূল্য ৬০ টাকা থাকলেও আগস্টের প্রথমেই পাইকারি বাজারে দুইশত টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
ভাই ভাই বাণিজ্য ভান্ডারের মালিক সুমন ভৌমিক তথ্য দিয়েছেন, ভোমরা শুল্ক স্টেশনে শুল্ক ও ভ্যাটের পরিমাণ বাড়ায় আমদানি মূল্য বেড়েছে। আমদানিকারকদের উদ্বৃতি দিয়ে তিনি জানান, বুধবারে তৃতীয় চালানে গাড়ী প্রতি ৫০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। স্থানীয় ট্রাক টার্মিনালের বাজার থেকে নগরীর ২৬ বাজার, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ, পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল ও রাজবাড়ী বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে।
ডুমুরিয়া উপজেলার ১৮ মাইল কাঁচা মাল আড়তের সাধারণ সম্পাদক কোহিনুর রহমান জানান, বৃষ্টির পানিতে কাঁচা ঝাল গাছ মরে যাওয়ায় প্রতি কেজি কাঁচা ঝাল দুইশ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
চুকনগর বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ভারতীয় কাঁচা মরিচ আসার পর থেকে বাজার দর নিম্নমুখী। আগামী সপ্তাহে মূল্য আরও কমবে। নতুন কাঁচা ঝাল না উঠা পর্যন্ত গেলবারের মতো ছয় মাস কাল ভারতের উপর নির্ভরশীল থাকতে হবে। স্থানীয় চাষীরা কাঁচা মরিচ গাছ হারিয়ে পুঁজির সংকটে পড়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম