উত্তরের জেলা রংপুর ও নীলফামারী থেকে আলু বোঝাই ট্রাক আসছে সপ্তাহের ৫ দিন। খুলনার কদমতলা মোকামে আলুর ট্রাক খালাস করার আগ্রহ নেই পাইকারী ব্যবসায়ীদের। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন এবার অনেক বেশী। প্রতিদিন গড়ে দু’হাজার মে.টন আলু আসছে। প্রতি কেজির পাইকারী মূল্য ৯টাকা থেকে ১০ টাকার মধ্যে। ২০১৯ সালে অক্টোবর মাসে প্রতি কেজির দাম ছিল ৪০টাকা। বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে তখন মোবাইল কোর্ট বসাতে হয়।
কদমতলা মোকামে রংপুর ও নীলফামারী থেকে প্রায় ১শ চাষী ও ফড়িয়া হাজি জবেদ আলী পাইকারী ব্যবসায়ীর গুদামে অবস্থান করছে। তাদের ভাষ্য সপ্তাহে ৫ দিন উত্তরের বিভিন্ন মোকাম থেকে খুলনার বাজারে আলু আসছে। পিরোজপুর, বাগেরহাট, নড়াইল ও খুলনা জেলার বিভিন্ন মোকামে প্রতিদিনের চাহিদা এখন গড়ে ১হাজার মে.টন। বাকি আলু ঘরেই পড়ে থাকছে।
নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার উত্তর বেরুবন্দ গ্রামের চাষী মোঃ ছয়ফুল ইসলাম তথ্য দিয়েছেন সেখানকার ৫জন চাষী ২২৫ বস্তা আলু নিয়ে কদমতলা মোকামে এসেছে। গত দু’দিনের মধ্যে আলু খালাস হয়নি। এখানকার আড়ৎদারদের আগ্রহ কমে গেছে। প্রতিকেজির পাইকারী মূল্য ৯ থেকে ১০ টাকা। তিনি ৪ বিঘা জমিতে আলু উৎপাদন করেছেন। খরচ ৪০ হাজার টাকা। এবার বড় অংকের টাকা তার লোকশান হবে। গতবার তিনি লাভের মুখ দেখেন। রংপুরের কালীকাপুর গ্রাম থেকে আসা চাষি নুরবক্স জানান, গেল শনিবার ২৫টন আলু নিয়ে তারা খুলনার মোকামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। রোববার এসে পৌঁছায়। ৪ দিনের মধ্যে ট্রাক খালাস হয়নি। আলুর গুনগতমান ও রং পবিরর্তন হয়েছে। গত সোমবার প্রতিকেজি এখানে ৬ টাকা দরে বিক্রি হয়।
নীলফামারী জেলার বাশদাহ গ্রামের চাষী সাহাবুল ইসলাম, চওড়া গ্রামের ফারুক হোসেন, আজাহারুল ইসলাম, ফেরদৌস আলম, তাজুল ইসলাম ও রংপুর গ্রামের মোকলেসুর রহমান জানান, চাহিদার তুলনায় এবার বেশী উৎপাদন হয়েছে। ২০১৯ সালে চড়া দাম হওয়ায় লাভের আশায় ২০২০ সালে চাষীরা অতিরিক্ত জমিতে আলু চাষ করে। উত্তরের অনেক চাষী দু’বিঘের স্থলে ক্ষেত্রবিশেষ চার বিঘা জমিতে আবাদ করে। তারা নগদ টাকায় বিক্রি করতে পারছে না।
উল্লেখ্য, নগরীর বিভিন্ন সড়কে ও কাঁচা বাজারে ৬ কেজি আলু ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় বাজারের বিভিন্ন দোকানে পুরোনো আলু মজুদ রয়েছে। এর চাহিদা কম। ক্ষেত্রবিশেষ কমদামেও পুরোনো আলু বিক্রি হয়। নগরীর ট্রাক টার্মিনালস্থ কাঁচা বাজারে এবার আলু বিক্রি নেই বললেই চলে।
খুলনা গেজেট/ এস আই