মহানগরী খুলনার অলিগলিতে গড়ে উঠেছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার । যার অধিকাংশই দীর্ঘদিন থেকে নবায়ন করা হয়নি। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই এসব প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা হচ্ছে। ইতিপূর্বে অনেক প্রতিষ্ঠানে ভূয়া ডাক্তার ও ভুল রিপোর্ট তৈরীর অভিযোগে জরিমানা করা হলেও পরবর্তীতে তা ফের দেদারছে পরিচালনা করা হচ্ছে।
এছাড়া দক্ষ ডাক্তার না থাকা এবং ভুল চিকিৎসার কারণে রোগীর মৃত্যুর ঘটনা তো আছেই। এমন অবস্থায় মান সম্মত ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার পরিচালনা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
এদিকে দেদারছে এগুলো পরিচালনা অব্যাহত থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেই কোন অভিযান। তবে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, একাধিক প্রতিষ্ঠানকে নবায়ন করার জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার মালিকরা জানিয়েছেন, নবায়ন ফি বৃদ্ধি, আন্ত:জটিলতা এবং করোনা পরিস্থিতির কারণেই নবায়নে ধীরগতি।
খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র মতে, শুধুমাত্র মহানগরীতেই ৭৮টি ক্লিনিক এবং ৮২টি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারসহ ১৬০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার মধ্যে নবায়ন আছে সর্বোচ্চ ২০টি প্রতিষ্ঠানের।
খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) দপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ড: মো: মনজুরুল মুরশিদ বলেন, শুধুমাত্র খুলনা মহানগরীতে ১৬০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার রয়েছে। সর্বশেষ তথ্যমতে এগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ২০টি প্রতিষ্ঠানের নবায়ন আছে।
তিনি আরও বলেন, “পরিচালক করোনা পজেটিভ হওয়ায় আমরা কোন ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তবে তিনি নিজে একাধিক প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে ভিজিট করেছেন। পাশাপাশি নবায়নের জন্য তাগিদও দিয়েছেন”।
খুলনা মেট্রো পলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) কানাই লাল সরকার জানান, নগরীর ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলো নবায়ন দেখভালের কাজ স্বাস্থ্য বিভাগের। এসকল বিষয়ে তারা যদি কোন আইনি সহযোগিতা প্রত্যাশা করে তবে আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করব।
RAB- ৬ এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল রওশনুল ফিরোজ বলেন, সারা দেশের মত খুলনায় ইতিমধ্যে ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলোতে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান করা হয়েছে। এগুলো এখনও নজরদারিতে আছে।
বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক ওনার্স এসোসিয়েশনের খুলনার প্রেসিডেন্ট ডা: গাজী মিজানুর রহমান জানান, ২০১৮ সাল থেকে নবায়ন ফি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিষয়টি তৎকালীন সময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছিল। তিনি ফি কমানোর আশ্বাস দিলেও সেটা বাস্তবায়ন হয়নি।
তাছাড়া ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার নবায়নে অফিসিয়ালী আভ্যন্তরীণ কিছু জটিলতা রয়েছে। তা মিডিয়ায় ব্যাখ্যা দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি অনেক প্রতিষ্ঠান নবায়নের আবেদন করা হলেও বিভিন্ন কারণে তার কোন আপডেট চায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে তিনি তার এসোসিয়েশনের সকল প্রতিষ্ঠানকে সকল নিয়ম কানুন মেনে নিয়ে নবায়ন কার্যক্রম করার জন্য জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট / এনআইআর