খুলনায় যৌথ বাহিনীর অভিযান ‘ডেভিল হান্টের’ দ্বিতীয় দিনে নগরীতে মোংলা পৌর আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতভর নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে অভিযানের প্রথমদিনে নগরীর দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে খুলনা সিটি কর্পোরেশন ১নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর শাহাদাত মিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিন রাতে তাকে খালিশপুর থানায় দায়ের হওয়া ভাংচুর মামলায় তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দেশব্যাপী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত হয় অপােরেশন ‘ডেভিল হান্ট’।
সোনাডাঙ্গা থানার এস আই আব্দুল হাই বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে এ থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে পুলিশ সাহায্য করে নৌবাহিনীর সদস্যরা। রাতে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা সকলে মাদক কারবারি ও মাদক সেবনের সাথে জড়িত। এরপর রাত ১২ টার দিকে সোনাডাঙ্গা ১নং ফেস এলাকার খালাসি মাদ্রাসার ১নং রোডে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে মোংলা পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধক্ষ্য নাসির হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়। তিনি বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত আছেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থানায় এসে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবেন বলে তিনি আরও জানিয়েছেন।
অপরদিকে দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মীর আতাহার আলী বলেন, অভিযানের প্রথমদিনে কেসিসি ১নং ওয়ার্ডের সাবেক শাহাদাত মিনাকে মহেশ্বরপাশা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই এলাকার জনৈক ইউসুফ সর্দারের ছেলে। তার নামে খানজাহান আলী ও খালিশপুর থানায় ভাংচুর ও মারামারির মামলা রয়েছে। ওইদিন রাতে তাকে খালিশপুর থানায় ভাংচুর মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। মঙ্গলবার রাতে দৌলতপুর থানায় অভিযান পরিচালিত হয়েছে কিন্তু উল্লেখযোগ্য কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলে তিনি আরও জানিয়েছেন।
খানজাহান আলী থানার অফিসার ইনচার্জ কবির হোসেন বলেন, রাতে তার থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এদিন রাতে অভিযানের সময়ে রাজনৈতিক মামলায় নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আজ আদালতে প্রেরণ করা হবে।
এদিকে লবণচরা থানার অফিসার ইনচার্জ তৌহিদুজ্জামান বলেন, রাতে লবণচরা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এদিন রাতে ৩১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক লাভলু খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ২০২২ সালে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কাঙ্গালীভোজের খাবার কেড়ে নেওয়া মামলার আসামি বলে এ প্রতিবেদককে আরও জানিয়েছে।
অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) বলেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। সন্ত্রাসী যতবড় হোক না কেন তারা আইনের উর্ধ্বে নয়। অভিযান চলমান থাকবে।
খুলনা গেজেট/এনএম