বার্ড ফ্লু, অবরোধ ও করোনার লোকসান কাটিয়ে উঠেতে পারিনি খুলনাঞ্চলের মুরগীর খামারীরা। এরই মধ্যে রাণীক্ষেত নামক ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে লাখ লাখ মুরগী। সরকারী প্রাণি সম্পদ কেন্দ্রে মাঝে মধ্যে ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। খোলা বাজার থেকে ভ্যাকসিন কিনে খামারে ভাইরাস মুক্ত করতে যেয়ে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। গামবোরা, ফাউল পক্স নামক ভাইরাস সালমোনেলা ও ফাউল কলেরা নামক ব্যাকটেরিয়াতেও মারা যাচ্ছে মুরগী।
আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় নয় লাখ ৯৬ হাজার ৯৫৯ টি মুরগী রাণীক্ষেত নামক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। উল্লিখিত সময় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নয় হাজার ২৬৬ টি মুরগী মারা যায়। জেলাগুলো হচ্ছে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, চুয়াডঙ্গা ও মেহেরপুর। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত মাগুরা জেলায়। মৃত্যুর দিক থেকে নড়াইল শীর্ষে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশী, লেয়ার ও ব্রয়লার জাতের মুরগী রাণীক্ষেত ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। গামবোরা ভাইরাসও মারাত্মক। রাণীক্ষেত নামক ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি প্রাণি সম্পদ কেন্দ্র থেকে বিসিআরডি নামক ভ্যাকসিন কিনতে হচ্ছে। সরকারি কেন্দ্রে মাঝেমধ্যে সংকট দেখা দিলে খোলা বাজার থেকে ভ্যাকসিন কিনতে হয়।
বিভাগীয় প্রাণি সম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডাঃ সুখেন্দু শেখর গায়েন বলেছেন, এ অঞ্চলের ৫৯টি প্রাণি সম্পদ অফিস থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এক থেকে ২১ দিন বয়সী মুরগীর জন্য বিসিআরডি এবং তার ওপর বয়সী মুরগীর আরডি ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। সরকারি প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ভ্যাকসিনেটরাও ভ্যাকসিন দিচ্ছে। মাঝেমধ্যে ভ্যাকসিনের সংকট হচ্ছে।
খুলনার রূপসা উপজেলার জয়পুর গ্রামের মোঃ তারেক আল মামুন নামক এক খামারি বলেন, গত এক মাসের ব্যবধানে এক এম্পোল ভ্যাকসিনের দাম বৃদ্ধি পেয়ে পাঁচশ’ থেকে ছয়শ’ টাকা হয়েছে। গত ১৫ দিন আগে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরও ৬০টি মুরগী মারা যায়। ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। তিনি আরও জানান, উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর থেকে ভ্যাকসিন বা পরামর্শ কোনটাই পান না। ফলে ভাইরাস প্রতিরোধ করতে গিয়ে খোলা বাজার থেকে ভ্যাকসিন কিনতে হচ্ছে ।
একই গ্রামের খামারি ফারুক হোসেন জানান, তার খামারে মুরগী রাণীক্ষেত নামক ভাইরাসে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা খরচ বাবদ অতিরিক্ত আট হাজার টাকা ব্যয় হয়।
খুলনাঞ্চলে এক কোটি ৬৩ লাখ দেশী, ৬০ লাখ লেয়ার ও ১৩ লাখ ব্রয়লার মুরগী লালন পালন হচ্ছে