বাণিজ্য মন্ত্রনালয় ভারতে ইলিশ রপ্তানীর অনুমতি দেওয়ার পর খুলনার ৪নং ঘাট ও রূপসা ঘাটে রপ্তানীকারকদের প্রতিনিধিদের হিড়িক পরেছে। প্রতিনিধিরা অসম প্রতিযোগীতায় নেমেছেন। ইলিশের নিদিৃষ্ট কোন দাম নেই। নগদ টাকা দিয়ে ক্রয় করায় অনেক ক্ষেত্রে ফড়িয়াদের তারা ঠকাচ্ছে। স্থানীয় মোকামে গতবছরের তুলনায় এবারে ইলিশ আমদানীর পরিমান অনেক কম। সেই সাথে দামও বেড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, এ অঞ্চল থেকে ২৩ জন রপ্তানীকারকের প্রতিনিধিরা ইলিশ ক্রয় করছে। রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, আরিফ সী ফুড, সেভ এন্ড সেফটি, বাগেরহাট সী ফুড, আলফা এগ্রো, সাউদার্ন ফুড, রূপসা ফিস এন্ড এ্যালাইড, রহমানিয়া ইনপ্যাক্ট, জয় এন্টারপ্রাইজ, সী গোল্ড এক্সপোর্ট, এমএস মাহিমা এন্টারপ্রাইজ, সততা ফিস ফিড, সরদার এ্যালুমোনিয়াম, আনোয়ার ফ্রোজেন ফুড, ন্যাশনাল এগ্রো ফিসারিজ, রাব্বি এন্টারপ্রাইজ, রিয়ানস হাব, কেবি এন্টারপ্রাইজ, এবি ইন্টারন্যাশনাল, বাবস বাংলাদেশ, জনতা ফিস ও বায়োনিক সী ফুড।
মৎস্য অধিদপ্তরের সূত্র জানান দেশের চাহিদা বিবেচনায় বাণিজ্য মন্ত্রনালয় বিভিন্ন সময় ইলিশ রপ্তানী বন্ধ রাখে। ২০১২ সালে আগে ভারতে ইলিশ রপ্তানী হয়েছে। গত বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে ইলিশ রপ্তানীর অনুমতি দেয়।
জনতা ফিসের স্থানীয় প্রতিনিধি এ প্রতিবেদককে জানান মহিপুর, পাথরঘাটা, চরদুয়ানী, কুয়াকাটা ও ভোলা থেকে প্রতিদিন ভোরে ইলিশ আসছে। বলেশ্বরের মাছ এখনো আসেনি। এককেজি সাইজের মাছের আমদানী অনেক কম। ৭শ গ্রামের মাছের আমদানি বেশী। তিনি বলেন, আমদানীকরকরা অসম প্রতিযোগীতায় নেমেছে। কেউ ৮শ গ্রাম ওজনের মাছ প্রতিকেজি ৯শ টাকা দরে আবার কোন রপ্তানীকারক ৮শ ৫০ টাকা দরে কিনছেন। রূপসা পাইকারী মৎস আড়তের রপ্তানীকারকদের প্রতিনিধিরা একই সাইজ ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি ৮শ ৪০টাকা দরেও কিনছেন।
বিএফডিসি’র মৎস্য অবতরন কেন্দ্র খুলনার ব্যবস্থাপক মোঃ রাসেল সিকদার এ প্রতিবেদককে জানান, এ অঞ্চল থেকে বাইশটি রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান ইলিশ কিনছে। প্রত্যেকেই চল্লিশ মে.টন মাছ রপ্তানীর অনুমতি পেয়েছে। তিনি জানান, ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩২টন খুলনার মোকাম থেকে বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশে করেছে। গত বছর এ মোকাম থেকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩২৫ মে.টন পশ্চিমবঙ্গে রপ্তানী হয়। এইসূত্র বলেছে, রপ্তানীকারকরা অসম প্রতিযোগীতায় নেমেছেন।
ইলিশ রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান অর্পিতা ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক বিশুদানন্দ আচার্জী জানান এবার ভারতে চারহাজার ছয়শ’ মে.টন ইলিশ রপ্তানী হবে। পশ্চিমবঙ্গে প্রতিকেজি ইলিশের রপ্তানী মূল্য বাংলাদেশী মূদ্রায় আটশ পঞ্চশ টাকা। ভারত ও বাংলাদেশের কাস্টমস্ থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ইলিশের এ চালান ছাড় করা হচ্ছে।
বেনাপোল কাস্টমস্ কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, ইলিশ রপ্তানীর তৃতীয় চালান মোংলা বন্দর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে গেছে। প্রতিদিন ট্রাক বোঝায় ইলিশ পশ্চিমবঙ্গে ঢুকছে। দ্রুত রপ্তানীর জন্য কাস্টমসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের উপ সচিব তালিয়া ইসলাম স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত রপ্তানী কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে ৫ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম