খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন সিনিয়র চিকিৎসকের ভাগনীর সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে গাইনী ইউনিট-২ এ। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন প্রয়োজনের তুলনায় ওষুধ ও অপারেশন সামগ্রির সাথে ১২টি গ্লোভস ও ৬টি সিরিঞ্জ কিনেছে তারা। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে এমন জালিয়াতিতে বিষ্মিত এই চিকিৎসক।
এই ঘটনা এখন খুমেক হাসপাতালের নিত্যদিনের। তবে সব জেনেও না জানার ভান করে আছে হাসপাতাল প্রশাসন। তথ্য প্রমাণ থাকার পরেও তদন্ত কমিটি গঠন করে দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের বাঁচানোর চেষ্টায় ব্যস্ত হাসপাতাল প্রশাসন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি ওষুধে বিনামুল্যে প্রদানের লোগো ব্যবহার করার কারণে বাইরে তা বিক্রি কঠিন হয়ে পরায় অভিনব কৌশলে রোগীদের ওষুধ চুরিতে জড়িয়ে পরছে হাসপাতালের আয়া ও ওয়ার্ডবয়দের একাংশ। কোন কোন ক্ষেত্রে নার্সদের প্রত্যক্ষ মদদ ও কিছু চিকিৎসকের নিস্ক্রিয়তা এই সংকট বাড়িয়ে দিয়েছে।
সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ওষুধ চুরির প্রবনতা গাইনি ও সার্জারি ওয়ার্ডে সব থেকে বেশি। বিশেষ করে গাইনী ও লেবার ওয়ার্ডে সিজারিয়ান বা নরমাল ডেলিভারির সময় প্রয়োজনের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি ওষুধ কিনতে হয় রোগীদের। দিন শেষে নির্ধারিত ওষুধের দোকানদার এসেই হাসপাতালের ভেতর থেকে আয়াদের টাকা দিয়ে আবার সেই ওষুধ নিয়ে যায় দোকানে।
৩০ সেপ্টেম্বর রাতে একই গাইনী ওয়ার্ডে বসে চুরির ওষুধ ভাগাভাগি করার সময় জেসমিন ও মালা নামে দুই আয়াকে দেখে ফেলে রোগীর স্বজনরা। তাৎক্ষনিক হাসপাতাল পরিচালককে বিষয়টি জানানোর জন্য একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও রিসিভ না করায় তা সম্ভব হয়নি। তবে পরদিন তাকে বিষয়টি জানালে তিনি অভিযুক্ত আয়াদের শাস্তি দিয়ে করোনা হাসপাতালে ডিউটি দিয়ে দিয়েছেন স্থায়ীভাবে। তবে তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযুক্তদের নির্দোষ প্রমান করে পুনবর্হাল করেছে।
সিজারিয়ান অপারেশন করা রোগী লিমার মা নাহিদা সুলতানা বলেন, অপারেশনের আগে ৫ হাজার টাকার ওষুধ কিনিয়েছে আমাদের। তারপর অপারেশনের সময় আরও কিছু ওষুধ ও ৬টি গ্লোভস ও ৬টি সিরিঞ্জ কিনিয়েছে, যা আমাদের সামনে আর ব্যবহার করেনি। কিছু বলতে গেলে খুবই খারাপ ব্যবহার করে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মুন্সি মোঃ রেজা সেকেন্দার বলেন, একটি অভিযোগ পাওয়ার পর উপযুক্ত চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি তদন্ত করা হয়। কমিটি যদি ঘটনার সত্যতা না পায় তাহলে তো আমার কিছু করার থাকে না।
খুলনা গেজেট /এমবিএইচ/এমএম