খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। চিকিৎসক ও রোগীর স্বজন কেউই রেহাই পাচ্ছে না এর থেকে। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে গত তিন দিনে তিনটি মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটলেও হাসপাতাল প্রশাসন রয়েছে নিরব ভূমিকায়। ওয়ার্ড মাষ্টারকে ম্যানেজ করে ঈদের ছুটিতে সিকিউরিটি গার্ড ও আউটসোর্সিং কর্মচারীরা কাজ করছে না ঠিকমত। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ ওয়ার্ডে রোগী কম থাকায় সারা রাত বহিরাগতরা টহল দেয় বিভিন্ন ওয়ার্ডে। কেউ এম্বুলেন্স ড্রাইভার আবার কেউ ওষুধের দোকানের প্রতিনিধি পরিচয় দিলেও সার্বক্ষণিক দলবেধে ওয়ার্ডের ভিতর মহড়া দেয়। এতে ঈদে হাসপাতালের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকিতে পড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে মেডিসিন ওয়ার্ড ৫-৬ থেকে ইমরান নামে এক রোগীর স্বজনের কাছ থেকে মোবাইল চুরি হয়। আগের দিন মেডিসিন ওয়ার্ডের বারান্দা থেকে কালাম নামে আরও একজনের মোবাইল চুরি হয়।
ভুক্তভোগী এই দুই জন জানান, সারারাতই প্রায় সজাগ ছিলেন। শেষ রাতে আধা ঘন্টা ঘুমাতে গেলেই উঠে আর মোবাইল পাননি তারা। এর আগের দিন দায়িত্ব পালনের সময় একজন ইন্টার্ণ চিকিৎসকের মোবাইল চুরি হয়ে যায় ওয়ার্ড থেকে। হাসপাতাল পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ ও থানায় জিডিও করেছেন এই চিকিৎসক, কিন্তু মোবাইল ফেরত পাননি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৩০ মে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডেই ছিনতাইযের স্বীকার হয়েছেন অসুস্থ স্বামীকে সেবা করতে আসা এক নারী। ছিনতাইকারীরা লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় তখন। হাসপাতালের চতুর্থ তলায় সংঘটিত এ ঘটনায় হাসপাতাল জুড়ে আলোচিত হয়।
সূত্র আরও জানায়, ৩০ মে দুপুরে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার বাসিন্দা আলী হায়দার (৬৭) মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার স্ত্রী ফরিদা ইসলাম (৫০)কে ডাক্তারের নাম করে চারতলায় ডেকে নিয়ে যায় এক যুবক। সেখানে গিয়ে গলায় চাকু ধরে তার দু’টি চুড়ি, চেন ও কানের দুল ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে সোনাডাঙ্গা থানার এসআই সুকান্ত ঘটনাস্থলে যান ও ভুক্তভোগীদের কথা শুনে লিখিত অভিযোগ নেন। তখন এ ঘটনা তদন্তের আশ্বাস দিলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি হাসপাতাল প্রশাসন। ফলে চুরির ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মুন্সি মোঃ রেজা সেকেন্দার বলেন, ‘যে সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো তাদের বেশির ভাগই ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা হিসাবে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন। যে কারণে হাসপাতালের সিকিউরিটি কিছুটা ঘাটতি দেখা দিতে পারে।’ তারপরও ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
খুলনা গেজেট/এমবিএইচ