খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২১ মে, ২০২৪

Breaking News

  ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে বাংলাদেশে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
  দুদিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং

খলিষাখালি ১৩১৮ বিঘা খাস জমির মালিকানার রায় ২৫ জানুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

Coat

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার খলিষাখালির এক হাজার ৩১৮ বিঘা জমি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এপিলেড ডিভিশনের রায় এর বিরুদ্ধে মালিকপক্ষ দাবিদারদের রিভিউ পিটিশনের শুনানী শেষ হয়েছে। বৃহষ্পতিবার(১১ জানুয়ারি) রিভিউকারী আনছার আলীদের পক্ষের আইনজীবী মধু মালতী চৌধুরী বড়ুয়া ও জসীমউদ্দিনের পক্ষে অ্যাড. অন রেকর্ড নুরুল ইসলাম চৌধুরী সুপ্রিম কোর্টের ১নং আপিল বিভাগে শুনানীতে অংশ নেন। শুনানী শেষে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আগামি ২৫ জানুয়ারি বৃহষ্পতিবার রায় এর জন্য দিন ধার্য করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালে খলিষাখালির ১৩১৮ বিঘা জমি খাস করা সম্পর্কিত পারুলিয়ার জসীমউদ্দিনের দায়েরকৃত মামলায় সাতক্ষীরা যুগ্ম জেলা জজ -২য় আদালত এর বিচারক এএসএম মাহাবুবর রহমান ওই জমি লাওয়ারিশ জমি হিসেবে ঘোষণা করে খাস সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করে দেখভাল করার জন্য ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি ভূমি সচীব ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়কে নির্দেশ দেন। একই আদেশে ওই জমি অ্যাড. কু-ু বিকাশ চৌধুরীসহ দুইজনকে রিসিভার নিয়োগ দেন। বিচারক রায় পর্যালোচনায় বলা হয় যে, ওই জমি নিয়ে জমির মালিক দাবিবদারগণ যে বিনিময় দলিল দাখিল করেছেন তার ৬০,৬১ ও ৬২ নং পাতার হাতের লেখার সঙ্গে অন্য পাতাগুলোর হাতের লেখার কোন মিল নেই। এছাড়া কয়েকজন মালিক দাবিদার আদালতে বয়নামার ফটোকপি জমা দিয়েছেন কিন্তু মূল বয়নামা জমা দেনননি। এমনকি সরকারি রাস্তা, খাল ও কালভার্টের ৫২ বিঘা জমি এসএ রেকর্ডভুক্ত করা হয়েছে। এ তিনটি কারণ উল্লেখ করেই ওই জমি জাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ আদেশের বিরুদ্ধে মালিক দাবিদাররা জজ কোর্টে আলি করে হেরে গেছেন। পরে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে হেরে যান তারা। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে ওই জমি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসককে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দেখভাল করার নির্দেশ দেন। ওই রায় পাওয়ার পর সাতক্ষীরা জজ কোর্টের জিপি অ্যাড. লুৎফর রহমান ২০২১ সালে কথিত জমির মালিক আনছার আলী. ডাঃ নজরুল ইসলাম, কাজী গোলাম ওয়ারেশ, ইকবাল মাসুদ, আনছার আলী, আব্দুল আজিজসহ কয়েকজন ১৩১৮ বিঘা জমি নিজেরা দখলে রেখে বা অন্যত্র লিজ দিয়ে ১৯৫৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৫০ কোটিরও বেশি সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন মর্মে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পরামর্শ দেন। জমির মালিকরা বেগতিক বুৃঝে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে সিভিল রিভিউ ১৬৮/২১ নং মামলা দায়ের করেন।

সিভিল রিভিউ পিটিশন ১৬৮/২১ এর শুনানীর পর অঅগামি ২৫ জানুয়ারি রায় প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের ১নং আপিল বিভাগের অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড এমডি. নুরুল ইসলাম চৌধুরী।

প্রসঙ্গত, খলিষাখালিতে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণে থাকা ১৩১৮ বিঘা জমিতে ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সাপমারা খালের দু’পাশের ভূমিহীনসহ এক হাজারের বেশি পরিবার বসবাস শুরু করে। এরপর থেকে ওই জমির মালিক দাবিদাররা ভূমিহীনদের নামে থানায় একের পর এক ফৌজদারি মামলা দেন। ওই জমি খাস জমি হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত দেওয়ার দাবিতে খলিষাখালি শেখ মুজিবনগর ভূমিহীন আন্দোলন সংগ্রাম কমিটির ডাকে সাড়া দিয়ে সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ, অ্যাড, ফাহিমুল হক কিসলু, প্রভাষক ইদ্রিস আলী, সিপিবি নেতা আবুল হোসেনসহ বিভিন্ন বামপন্থী নেতাগণ আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করেন।

২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক জরুরী সভায় সাতক্ষীরার তৎকালিন পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান খলিষাখালির ৪৩৯দশমিক ২০ একর জমি নিয়ে পারুলিয়ার জসীমউদ্দিনের এসএ রেকর্ড সংশোধন ও খাস জমি হিসেবে পরিণত করার দেঃ ১৮/১০ নং টাইটেলশুটের মামলায় সাতক্ষীরার যুগ্ম জেলা জজ আদালত-২ এর বিচারক এসএম মাহাবুবর রহমান এর রায়টি উল্লেখ করেন।

জমির মালিক দাবিদারদের সুপ্রিম কোর্টের সিভিল রিভিউ মামলাটি শুনানী না হওয়া পর্যন্ত তাদের জমিতে কোন স্বত্ব নেই দাবি করে সেখানে বসবাসরত আট শতাধিক ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদ করা যাবে না মর্মে মতামত ব্যক্ত করেন পুলিশ সুপার।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!