খুলনার কয়রায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস’র প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা এলাকার শ্রীপদ মণ্ডলের বাড়ির সামনে বুধবার (২৬ মে) দুপুরের প্রবল জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের ৪/৫ গ্রামও প্লাবিত হয়েছে বাঁধ ভেঙ্গে।
এছাড়া মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়ায় কপোতাক্ষ নদের পাউবোর বেড়িবাঁধে প্রায় ১০ স্থানে ভেঙে লোনা পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। মঠবাড়ি বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। মহারাজপুর গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, দশালিয়ায় পাউবোর বেড়িবাঁধ ১০টি স্থানে প্রায় ১শ হাত জায়গায় প্রবল জোয়ারের পানিতে ভেঙে গেছে। এতে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। ডুবে গেছে মাছের ঘের, বিশাল ফসলি জমি। এ এলাকার ৩১/৩২টি পরিবারের মধ্যে ৭/৮টি পরিবারের বসত বাড়ির মধ্যে পানি ঢুকে গেছে। শত চেষ্টা করেও বেড়িবাঁধ রক্ষা করা যায়নি।
কয়রার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বাধীন সমাজকল্যাণ যুব সংস্থার সভাপতি মো. আবু সাঈদ খান বলেন, কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা এলাকার শ্রীপদ মণ্ডলের বাড়ির সামনে দুপুরের জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। পূর্ণিমার প্রভাবে কপোতাক্ষ নদের পানি বেড়ে বেড়িবাঁধ উপচেও অনেক স্থানে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এ নিয়ে এলাকার হাজারো মানুষ আতঙ্কে আছেন।
স্থায়ীদের অভিযোগ, বার বার বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হলেও টেকসই বাঁধ নির্মাণে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। কখনো কখনো দায়সারা কাজ হয়েছে। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা মানুষের কষ্টের কথা কখনোই বিবেচনায় নেয়নি। যে কারণে আম্পানের এক বছর পার হতে না হতেই আবার ইয়াস’র প্রভাবে পানিতে ডুবতে হচ্ছে।
কয়রা উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, কয়রার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া, পবনার বেড়িবাঁধ, মঠবাড়ি মঠের কোনা, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ননের চোকুনি, তেঁতুলতলার চর, শিংগির-কণা, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নে গাতিরঘেরী, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নে আংটিহারা, বিনাপানি পদ্মপুকুর এলাকায় দুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় ২৩,৪০০ জন। এছাড়া ঐ এলাকার ৫৮৫০ পরিবারে মধ্যে ১২০০ পরিবার আংশিক বিধ্বস্ত ও ৫০ পরিবার সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্গত এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৫,২০০ মানুষ।
এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু ভেঙে যাওয়া বেঁড়িবাধের স্থানগুলো পরির্দশনকালে তিনি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের সার্বিক সহযোগিতায় আশ্বাস দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দ্রুত বাঁধ মেরামতের নির্দেশ দেন।
খুলনা গেজেট/এনএম