খুলনার কয়রায় ট্রিপল মার্ডারের ১১ দিন পরেও কোন ক্লু উদঘাটন হয়নি। দায়ের হওয়া মামলায় ৩ জনকে আটক করে তিনদিনের রিমান্ড শেষেও কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য মেলিনি। তবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেশ কয়েকটি সূত্র ধরে ঘটনার ক্লু উদ্ধারে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে দাবি পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে বেশ কয়েকজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নিহত পরিবারের সাথে পূর্ব শত্রুতা থাকায় ঘটনার দিন চার জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যা মামলায় আটক দেখিয়ে ৩ জনকে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে বিজ্ঞ বিচারক শুনানী শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে রিমান্ডে তেমন কোন তথ্য পায়নি পুলিশ। রিমান্ড শেষে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়। তারা জেল হাজতে রয়েছে। আটকৃতরা হলেন, বামিয়া গ্রামের মৃত কওছার গাজীর পুত্র জিয়াউর রহমান জিয়া (৪১), কুদ্দুস গাজীর স্ত্রী সুলতানা (৩৮) ও মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের ভাগবা গ্রামের মৃত্যু মোকছেদ আলী সরদারের পুত্র আঃ খালেক (৬৫) ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আসাদুল ইসলাম খুলনা গেজেটকে বলেন, কিছু তথ্য পাচ্ছি, বিশ্লেষণ চলছে। আমরা প্রযুক্তিগত তদন্ত, মাঠ পর্যায়ের তদন্তসহ বিভিন্ন দিক দিয়ে ক্লু উদঘটনের চেষ্টা করছি। স্পেশালাইজড টিমও আসছে। তিনি আরও বলেন, রিমান্ডে আটকৃতদের কাছ থেকে নির্ভরযোগ্য কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুনঃ কয়রায় ট্রিপল মার্ডারের ক্লু উদ্ধার হয়নি, দাফন সম্পন্ন
খুলনার সহকারি পুলিশ সুপার (ডি-সার্কেল) মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, জানানোর মত তেমন কোন তথ্য পাইনি। এটা বেশ খানিকটা ক্লুলেস। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুত ক্লু উদঘাটিত হবে।
এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, হত্যা মামলায় সন্দেহজনক গ্রেপ্তার হওয়া রাজিয়া সুলতানার স্বামী আব্দুল কুদ্দুস গাজী খুলনার নিরালা কাঁচাবাজার এলাকায় ব্যবসা করতেন। তিনি ব্যবসার কারণে অধিকাংশ সময় খুলনায় থাকতেন। লাশ উদ্ধারের দিন থেকে আসামি রাজিয়া সুলতানার স্বামী আব্দুল কুদ্দুস গাজী নিখোঁজ রয়েছেন। খুলনার নিরালা এলাকায় সর্বশেষ ২৬ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে তাকে দেখা যায়। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
আরও জানা যায়, হাবিবুল্লাহ গাজী তক্ষক সাপের বেচাকেনায় জড়িত ছিল। তাদের ধারনা, তক্ষক ব্যবসায়িদের সাথে লেনদেন নিয়ে ঝামেলায় এই হত্যাকান্ড হতে পারে। তবে এটা নিশ্চিত কোন তথ্য নয়।
আরও পড়ুনঃ কয়রায় বাবা-মা-কন্যাকে কুপিয়ে হত্যা (ভিডিও)
উল্লেখ্য, কয়রার বাগালী ইউনিয়ন পরিষদের পাশে বসবাসকারী মৃত আব্দুল মাজেদ গাজীর পুকুরে মঙ্গলবার ( ২৬ অক্টোবর) সকালে লাশ ভাসতে দেখে এলাকাবাসি পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে। নিহতদের শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। সোমবার রাতের কোন এক সময় তাদেরকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ ধারণা করে।
নিহতরা হলেন, বামিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মাজেদ গাজীর পুত্র হাবিবুল্লাহ গাজী (৩৩), তার স্ত্রী বিউটি খাতুন (২৫) ও একমাত্র কন্যা হাবিবা খাতুন টুনি (১৩)। হাবিবুর পেশায় দিনমজুর, তার স্ত্রী গৃহিনী ও একমাত্র মেয়ে হাবিবা খাতুুন টুনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী।
খুলনা গেজেট/ টি আই