মহামারী করোনায় পুরো বিশ্ব নাকাল, চারিদিকে কেবল মৃত্যুর হাতছানি। সামাজিক সম্পর্কগুলিও আজ অনেকটা উপেক্ষিত। এমন একটা সময়ে এলো ত্যাগ ও মহিমার ঈদ উল আজহা। এমন মহামারির মধ্যে ঈদের আনন্দের কথা হয়তো কিছুটা বেমানান মনে হতে পারে, কিন্তু শিশুরা কি মহামারি, দারিদ্রতা এগুলো বুঝে। তাদের কাছে ঈদতো ঈদই।
আইলা আম্ফানের পর ইয়াসের ভয়াবহতা আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি কয়রাবাসি। অসংখ্য পরিবার এখনো পারেনি ঘরে ফিরতে। রাস্তার উপর ঝুপড়ি ঘরেই তাদের ঈদ উদযাপিত হবে। সে ঈদ কেমন হবে আসুন শুনি আম্পান পরবর্তী সময় থেকে ঝুপড়ি ঘরে বসবাসকারি ফরিদা খাতুনের পরিবারের সাথে।
কয়রা সদর ইউনিয়নের গোবরা সোনাইপাড়া গ্রামের ফরিদা খাতুন ৭ বছরের ছেলে ইয়াছিনকে নিয়ে খাস জমিতে ঝুপড়ি বেধে বসবাস করেন। স্বামী পরিত্যাক্তা ফরিদা খাতুন ছেলেকে নিয়ে বাবা মায়ের সাথেই থাকতেন। কয়েক বছর আগে বাবা মারা যায় সাথে আইলায় বসতভিটা নদীগর্ভে বিলিন হলে অসহায় হয়ে পড়েন ফরিদা। ছেলে ইয়াছিনকে নিয়ে মায়ের সাথে ঝুপড়িতেই বসবাস করেন। নদীতে জালটেনে মাছ ধরার মাধ্যমেই সংসার চালান। সাথে ইয়াছিনকে পড়াশুনাও করান। একদিন বাদেই ঈদ। ছোট ইয়াছিনের আবদার নতুন জামা চাই তার। যেখানে নিজেদের তিন বেলা খাবার খরচ যোগাতে হাত পাততে হয় অন্যের কাছে সেখানে ঈদে নতুন জামাতো তার পরিবারের কাছে কল্পনাপ্রসূত ভাবনা।
বিলিভার’স এইড এবার ঈদে কয়রায় ইয়াতিম-অসহায় শিশুদের নতুন জামা উপহার দিয়েছে। ইয়াছিনের পরিবারের খোঁজ পেয়ে তারা ছুটে যান ইয়াছিনের বাড়িতে। তার নতুন জামার আবদার পূরণ করেন তারা। ইয়াছিনের খুশির সীমা যেন বাধ ভেঙ্গেছে।
কয়রা উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের ৪০ টির অধিক ইয়াছিনের মতো শিশুদের ঈদে নতুন জামা উপহার দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিলিভার’স এইড।
বিলিভার’স এইডের পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, করোনার পাশাপাশি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অধিক ক্ষতিগ্রস্থ কয়রা উপজেলা। লকডাউনে গরীব অসহায় মানুষের আয়ের পথ বন্ধ। এমন একটা অবস্থার মধ্যে এসেছে ঈদ। বিলিভা’স এইডের পক্ষ থেকে আমরা চেষ্টা করেছি এমন কিছু ইয়াতিম অসহায় পরিবারের শিশুদের ঈদে নতুন জামা দেয়ার মাধ্যমে ঈদকে আনন্দমুখর করতে। বিলিভা’স এইড সব সময় অসহায় মানুষের পাশে থেকে তাদের এভাবে কাজ করে যাবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই