খুলনার কয়রা উপজেলার আলোচিত-সমালোচিত কৃষি কর্মকর্তা মিজান মাহমুদকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তার দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তিনি স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক অবমুক্ত) হবেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আসাদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ কথা বলা হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন যাবৎ স্থানীয় বিসিআইসি সার ডিলারদের সঙ্গে এই কর্মকর্তার বিরোধ চলে আসছিল। তার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ডিলারেরা সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে উৎকোচ নেওয়া, ডিলারদের নিয়মিত সার বিতরণ না করে উদ্দেশ্যমূলক অধীনস্থ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দিয়ে ডিলারদের হয়রানি করতে বাধ্য করার অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন মৌসুম ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন বাবদ বরাদ্দ অর্থ আত্মসাত, উপজেলা বিসিআইসি সার ডিলার ও খুচরা সার বিক্রেতাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এর আগেও পার্শ্ববর্তী জেলা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়ের অভিযোগ উঠেছিল। এ কারণে তাকে সুনির্দিষ্ট অভিযােগ উল্লেখ করে তাকে অন্যত্র বদলি করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য খামারবাড়িতে ডিও লেটার দিয়েছিলেন।
আরও জানা যায়, তিনি দীর্ঘ চার বছরের বেশি কয়রা উপজেলায় কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই সময়ে তিনি নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য।
গত বছর ১৮ অক্টোবর ‘কয়রা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়’ শিরোনামে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। উক্ত সংবাদ-এর প্রেক্ষিত কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত টিম কয়রা উপজেলা সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায়। পরে প্রতিবেদন খামার বাড়িতে মহাপরিচালকের কার্যালয় জমা দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে তাকে বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলাতে বদলি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কৃষি কর্মকর্তা মিজান মাহমুদ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
খুলনা গেজেট / এআর