খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়লকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে কয়রা থানায় দায়েরকৃত ২০১৩ সালের পুলিশ মার্ডার মামলা অভিযোগপত্র বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক আমলে নেয়ায় স্থানীয় সরকার ( ইউনিয়ন পরিষদ ) আইন , ২০০৯ এর ৩৪ ( ১ ) ধারা অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
১ নভেম্বর স্থানীয় সরকার , পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউপি -১ শাখার জেসমীন প্রধান সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ইন্সপেক্টর আব্দুল লতিফ চার্জশিটে উল্লেখ্য করেছেন, ২০১৩ সালের ৯ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে কয়রা থানার অপর একটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি আব্দুল গনি সরদারের বাড়ীতে অভিযান চালায় পুলিশ। এদিকে, পুলিশ আব্দুল গনি সরদারের বাড়ীতে পৌঁছানোর পূর্বেই সেই মামলার বাদীর নূরুল আমীন মোড়লের চাচাতো ভাই নাছের আলী মোড়ল, আছের আলী মোড়ল, গোলাম মোস্তফা রিপন, রউফ শেখ, তাইজুল গাজী ও দাদরিজ শেখসহ কয়েকজন হাজির হয়। তাদের সাথে থাকা আসামি পরিতোষ কুমার মন্ডলের বন্দুক ও গুলি, লাঠি-শোটা, হাতুড়িসহ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গনি সরদারকে বাড়ীতে না পেয়ে তার স্কুল পড়ুয়া শিশুসন্তান সিরাজুলকে ধরে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। তখন বাড়ীর মহিলা ও শিশুরা ডাক-চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় মসজিদে প্রচার করতে থাকে যে, “নাছের বাহিনীর লোকজন হামলা করেছে। তোরা কে কোথায় আছিস এগিয়ে আয়।” তখন গোলখালী গ্রামের সাধারণ জনগন সমবেত হয়ে প্রতিরোধ করতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও উচ্চস্বরে ডাক-চিৎকার করতে থাকে। এসব ডাক-চিৎকার শুনে ওই পুলিশ ফোর্স দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণকালে তদন্তে প্রকাশিত আসামিরা পুলিশ ফোর্সের পেছনে অবস্থান নেয়।
একপর্যায়ে পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যে তুমুল বাক-বিতান্ডা শুরু হয়। ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পুলিশের পেছনে অবস্থান নেয়া আসামিদের মধ্যে আব্দুর রউফ শেখ অপর আসামি আছের আলীর কাছে থাকা বন্দুক দিয়ে গুলি করলে কনস্টেবল মফিজুল ইসলামের বাম পায়ের হাটুর পিছনে বিদ্ধ হয়, এতে মারাত্মক জখম হন তিনি। এসময়ে রাত সাড়ে ১২টা বাজে। চিকিৎসার জন্যে হাসপাতালে নেবার পথে মারা যান কনস্টেবল মফিজুল ইসলাম। ২০১৪ সালের ১০ জুলাই পুলিশ হেডকোয়াটার্স মনিটরিং সেলের ১৭৭তম এবং ২০১৫ সালের ৯ এপ্রিল ১৭৯তম সভায় বিস্তারিত আলোচনান্তে প্রত্যেক আসামির অপরাধ শনাক্ত করে অভিযোগপত্র সুনির্দিষ্ট চার্জ এনে অভিযোগপত্র দাখিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সম্প্রতি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করলে সেটি আদালত আমলে নেয়।
খুলনা গেজেট/ টি আই