গেলো আগস্টে কোরবানী ঈদের পর থেকে খুলনার পাঁচটি উপজেলায় ক্ষুরা রোগের কারণে গরুর দুধ ও মাংসের উৎপাদন কমেছে। ফলে করোনা ও ক্ষুরা রোগের মত বড় দু’টো ধাক্কায় জেলার খামারীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রতি মাসে দুধের উৎপাদন গড়ে তিন হাজার মেট্টিক টন ও মাংসের উৎপাদন দু’হাজার মেট্টিক টন করে কমেছে। ক্ষুরা রোগ নিরাময় এবং গবাদী পশুর স্বাস্থ্য রক্ষার্থে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় প্রতিষেধক সরবরাহ করেছে।
প্রাণি সম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ভারত থেকে আসা হরিয়ানা জাতের গরু ক্ষুরা রোগ ছড়িয়েছে। এছাড়া গেল আগস্টে কোরবানী ঈদের পর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা গরু জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে রোগ ছড়ায়। খামারীদের অসচেতনতার কারণে জলাবদ্ধ এলাকায় রোগাক্রান্ত গরু বেধে রাখে। এতে আরও ক্ষতি হয়। ফলে খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকা, ডুমুরিয়া, তেরখাদা ও ফুলতলা ও দিঘলিয়া উপজেলায় ক্ষুরা রোগ ছড়িয়ে পড়ে। কোরবানী ছাড়াও বর্ষা মৌসুমের আগে ও পরে ক্ষুরা রোগ দেখা দেয়। প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ায় ক্ষুরা মহামারী আকারে ধারণ করেনি।
জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা এস এম আওয়াল জানান, এ রোগ দেখা দেয়ায় উল্লেখিত উপজেলাসমূহে গবাদী পশুর স্বাস্থ্যহানি, খাবারে অরুচি, দুধ ও মাংস উৎপাদন কম হয়। গাভী এ রোগে আক্রান্ত হলে দুধ বাজারে বিক্রি বা দুগ্ধপোষ্য বাছুরকে খাওয়ানো যাবে না। এ রোগের জীবাণু বাছুরের পেটে প্রবেশ করলে মারাও যেতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনাকালীন লকডাউনের সময় দিঘলিয়া, তেরখাদা, রূপসা, ডুমুরিয়া ও ফুলতলার খামারীরা কাঙ্খিত দামে দুধ বিক্রি করতে পারেনি। এছাড়া ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রতিটি খামারে দুধ কমতে থাকে।
সূত্র আরও জানায়, বছরে খুলনা জেলায় আড়াই লাখ টন গরুর দুধ ও এক লাখ ৫৪ হাজার মেট্টিক টন মাংস উৎপাদন হয়। ক্ষুরা রোগের কারণে এ বছর ৩৬ হাজার মেট্টিক টন দুধ এবং ২৪ হাজার মেট্টিক টন মাংস উৎপাদন কম হবে।
করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে জেলার সাত হাজার ৬শ’ ১৬ জন খামারী ৩৮ লাখ টাকা অনুদান পাবেন। জেলায় পোল্ট্রী, ডেইরী ও মোটাতাজাকরণ গরুর খামারের সংখ্যা প্রায় সাড়ে দশ হাজার।
খুলনা গেজেট /এমএম