আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে যশোরে পর্যাপ্ত পশু পালন করেছেন খামারিরা। যা কোরবানির চাহিদার তুলনায় বেশি। এ কারণে জেলায় বাইরে থেকে গরু-ছাগল আনার প্রয়োজন হবে না। প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, এ বছর যশোরে মোট পশু উৎপাদন হয়েছে ৯৫ হাজার ৭শ’ ১০টি। জেলায় কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে ৯১ হাজার ১শ’ ৮৮টি। উদ্বৃত্ত থাকবে ৪ হাজার ৫শ’ ২২টি।
যশোরে উৎপাদিত ও পালন করা পশুর মধ্যে রয়েছে, ষাঁড় ২৫ হাজার ৬শ’ ৮০, বলদ ২ হাজার ৯৩, গাভী ১ হাজার ৩শ’ ৯৭, ছাগল ৬৫ হাজার ৯শ’ ৮৩ ও ভেড়া ৫শ’ ৫৭টি। পাশাপাশি কোরবানির জন্য চাহিদাকৃত ৯১ হাজার ১শ’ ৮৮টি পশুর মধ্যে রয়েছে ষাঁড় ২৪ হাজার ৪শ’ ৮০, বলদ ২ হাজার ৭৮, গাভী ১ হাজার ৩শ’ ৯৭, ছাগল ৬২ হাজার ৬শ’ ৭৬ ও ভেড়া ৫শ’ ৫৭টি।
প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, আসন্ন কোরবানি ঈদে বিক্রির উদ্দেশ্যে যশোর সদর উপজেলা এলাকায় ১ হাজার ১শ’ ৪৪ জন খামারি ৩ হাজার ৫শ’ ৮৭ ষাঁড়, ৫শ’ ২৯ বলদ, ৩শ’ ১৭ গাভী, ১৫ হাজার ৯শ’ ৪৮ ছাগল ও ৭২টি ভেড়া উৎপাদন করেছেন। এরমধ্যে ঝিকরগাছায় ১ হাজার ৩শ’ ৫৬ জন খামারি ৩ হাজার ১শ’ ১৭ ষাঁড়, ৩শ’ ৬২ বলদ, ২শ’ ২৭ গাভী, ৮ হাজার ৫শ’ ৭৩ ছাগল ও ৭৩টি ভেড়া পালন করেছেন। শার্শায় ১ হাজার ১শ’ ৭৫ জন খামারি উৎপাদন করেছেন ২ হাজার ৩শ’ ৫৩ টি ষাঁড়, ১শ’ ৬৬টি বলদ, ১শ’ নয়টি গাভী, ৭ হাজার ২০ ছাগল ও ৭০টি ভেড়া। মণিরামপুরে ৪ হাজার ৬শ’ ১০টি ষাঁড়, ১শ’ ৮০টি বলদ, ১০ হাজার ৮শ’ ৭০টি ছাগল ও ১০টি ভেড়া উৎপাদন করেছেন ১ হাজার ৫শ’ ৪০ জন খামারি। কেশবপুরে ১ হাজার ৩শ’ ১১ জন খামারি ৩ হাজার ৮শ’ ৭২টি ষাঁড়, ২শ’ ৬৫টি বলদ, ১১টি গাভী, ৬ হাজার ৯শ’ ৬১টি ছাগল ও ৮১টি ভেড়া পালন করেছেন। অভয়নগরে ৮শ’ খামারি উৎপাদন করেছেন ২ হাজার ৬শ’ ৯৫টি ষাঁড়, ১শ’ ৪৫টি বলদ, ১শ’ ৩০টি গাভী, ৪ হাজার ৫শ’ ৫টি ছাগল ও ১৫টি ভেড়া। বাঘারপাড়ায় উৎপাদিত হয়েছে ২ হাজার ৬শ’ ৫৫ ষাঁড়, ১শ’ ৪৫ বলদ, ২শ’ ৩০ গাভী, ৪ হাজার ৯শ’ ৭৫ ছাগল ও ২শ’ ৫ টি ভেড়া। ৯শ’ ৩০ জন খামারি এসব পশু উৎপাদন করেছেন। চৌগাছায় ১ হাজার ৬৪ জন খামারি ষাঁড় ২ হাজার ৭শ’ ৯১টি, বলদ ৩শ’ ১টি, গাভী ৩শ’ ৭৩টি, ছাগল ৭ হাজার ১শ’ ৩১টি ও ভেড়া ৩১টি পালন করেছেন। অবশ্য এবারের ঈদুল আজহায় সদর উপজেলায় ২০ হাজার ৮১টি, ঝিকরগাছায় ১১ হাজার ৭শ’ ২৯টি, শার্শায় ৯ হাজার ৫৩টি, মণিরামপুরে ১৫ হাজার ২শ’ ৯০টি, কেশবপুরে ১০ হাজার ৬শ’ ৪টি, অভয়নগরে ৬ হাজার ৯শ’ ২০টি, বাঘারপাড়ায় ৭ হাজার ৪শ’ ৩৫ ও চৌগাছায় ১০ হাজার ৭৬টি পশুর চাহিদা রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়।
গত বছরের তুলনায় এবার খামারিরা পশু বিক্রি নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। কারণ এবার পশুর দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। খাদ্যসহ বিভিন্ন জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পশু পালন খরচ বেশি হয়েছে বলে নাছির উদ্দিন নামে এক খামারি জানান। তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি দামে পশু বিক্রি করতে না পারলে খামারিরা লোকসানে পড়বেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে যাতে কোনো গরু প্রবেশ না করে সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। কারণ ভারত থেকে গরু এলে স্থানীয় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাছাড়া, যশোরে কোরবানিতে যে পরিমাণ পশুর চাহিদা রয়েছে তার চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে। এ কারণে বাইরের পশুর প্রয়োজন হবে না।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাজারে মাংসের যে দাম, সেই তুলনায় কোরবানির পশুর দাম কম হবে না। ফলে খামারিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না বলে মনে করছেন এই কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট / আ হ আ