সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম এর বিরুদ্ধে শত্রুতামূলকভাবে কৈখালী সিদ্দিকিয়া রাশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও হাজী ছায়রা সামাদ এতিমখানায় থাকা ১০ হাজার লিটার সুপেয় পানি নষ্টের অভিযোগ উঠেছে। রোববার (৮ মে) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন কৈখালী সিদ্দিকিয়া রাশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ আব্দুল্যাহ আল মামুন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শ্যামনগরের কৈখালী ইউনিয়নের বৈশখালী বিজিপি সড়কের পাশে কৈখালী সিদ্দিকিয়া রাশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও হাজী ছায়রা সামাদ এতিমখানাসহ বায়তুল আমান জামে মসজিদ অবস্থিত। অত্র প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৪৫০ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। এতিম খানায় ২০ জন শিক্ষার্থী থেকে লেখাপড়া করে। অত্র এলাকার পানি লবনাক্ত হওয়ায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুপেয় পানির জন্য হা হা কার করতে হতো। ২০১৭ সালে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে এবং রমজান মাসে ইফতারে মুসুল্লীদের সুপেয় পানির জন্য রূপান্তর এনজিও ১০ হাজার লিটারের দু’টি পানির ট্যাংক প্রদান করেন। সুপেয় পানির কোন উৎস না থাকায় বর্ষা মৌসুমে ওই ট্যাংক-এ পানি ধরে রাখা হয়। কিন্তু কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ২০২১ সালের রমজান মাসে মাদ্রাসায় কেউ না থাকার সুযোগে দলীয় লোকজন নিয়ে ১টি পানির ট্যাংক নস্ট করে দেয় এবং আরেকটি ট্যাংক এর পানি তার দলীয় লোকদের মধ্যে দিয়ে দেয়। এতে করে ছাত্র/ছাত্রীরা সুপেয় পানির তীব্র সংকটে পড়েছিল। এবছরও গত ৩০ এপ্রিল ২৮ রমজানে জয়খালী গ্রামের মৃত. আবু দাউদের ছেলে কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে বৈশখালী গ্রামের মৃত শাহাবুদ্দিনের ছেলে ২নং ওয়ার্ডের মেম্বর শমসের আলম, জয়খালী গ্রামের মৃত আহাদ আলীর ছেলে রুস্তম চৌকিদার, তারানিপুর গ্রামের মৃত. জিয়াদ আলী গাজীর ছেলে আক্তার হোসেন, জয়খালী গ্রামের মৃত ছফেদ গাজীর ছেলে হোসেন আলী, মৃত জিন্নাত গাজীর ছেলে জামির হোসেন, সমসের গাজীর ছেলে আব্দুর রহিম, মৃত কেফাপাড়ের ছেলে রুহুল কুদ্দুস, বৈশখালী গ্রামের মৃত. হামিদ মহাজনের ছেলে মোহর আলী মহাজনসহ আরো বেশ কয়েকজন ব্যক্তি মাদ্রাসার ট্যাংকির তালা ভেঙ্গে ট্যাংকিতে মজুদ থাকা সমস্ত পানি নিজেরা ভাগ করে নিয়ে যায় এবং ট্যাংকিতে একটি নতুন তালা লাগিয়ে রাখে। যার চাবি চেয়ারম্যান নিজের কাছে রেখে দিয়েছে।
পবিত্র রমজান মাসে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম শত্রুতামূলকভাবে এধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মাও: মোঃ আব্দুল বারী ও জমি দাতা মোঃ আব্দুর সবুরসহ স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম ও তার ক্যাডাররা তাদের মারপিট করতে উদ্যাত হয় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম পরিকল্পিকভাবে ওই দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধের চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এবছর ট্যাংকিতে পানি না থাকায় শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়বে। তারা ওই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক ট্যাংকির চাবি প্রতিষ্ঠানের নিকট ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদ্রাসার সভাপতি মাও: আব্দুস সালাম, প্রতিষ্ঠাতা দাতা সদস্য শেখ আব্দুস সবুর, সদস্য মাওঃ আব্দুল বারী ও আবু মুছা প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/ টি আই