খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২০ মে, ২০২৪

Breaking News

কেডিএ নিবীড় আবাসিকে নেই পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধা, প্রবেশের সড়কটির বেহাল দশা

একরামুল হেসেন লিপু

নগরীর খানজাহান আলী থানার ফুলবাড়ি গেট সংলগ্ন কেডিএ খানজাহান আলী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কেডিএ নিবীড় আবাসিক এলাকায় যাতায়াতের প্রধান একটি সড়ক। খুলনা -যশোর মহাসড়ক থেকে সড়কটির দূরত্ব মাত্র ১ কিলোমিটারের মতো। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি মেরামত না করার কারণে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী, শিক্ষক, আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী এবং সাধারণ পথচারীদের চলাচলে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া উক্ত আবাসিক এলাকায় বসবাসকারীদের সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রকৃত নাগরিক সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

কেডিএ আবাসিক এলাকায় বসবাসকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, প্রায় ৭/৮ বছর পূর্বে সড়কটির মাঝখানে খুঁড়ে ওয়াসার পানি আবাসিক এলাকায় সরবরাহের জন্য ট্যাংক নির্মাণের নিমিত্তে ২ টি বৃহদাকার পাইপ বসানো হলেও পরবর্তীডে আর সড়কটি সংস্কার করা হয়নি। ফলে সড়কটি মাটির রাস্তায় রূপান্তরিত হয়। অসংখ্য গর্ত তৈরী হয়। বর্ষা মৌসূমে সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি কর্দামাক্ত হয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে কেডিএ খানজাহান আলী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মচারী এবং নিবীড় আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী ও সাধারণ পথচারীদের চলাচলে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

কেডিএ খানজাহান আলী সরকারি মাধমিক বিদ্যলায়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মাহাবুর রহমান খুলনা গেজেটকে বলেন, অত্র বিদ্যালয়ে ৬ষ্ট থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত ৬ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী পড়াশুনা করছে। ছাত্র-ছাত্রীসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের যাতায়াতের একমাত্র পথ হচ্ছে উক্ত সড়কটি। দীর্ঘদিন যাবৎ সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় সড়কটি দিয়ে যাতায়াতে ছাত্র-ছাত্রীসহ আমাদের সবার দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র মহোদয় এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশারকে অবহিত করেছি। তাঁরা দু’জনই সড়কটি দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি আরো বলেন, সুষ্ঠু পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার কারণে বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে পানি জমে থাকে। ফলশ্রুতিতে ছাত্রছাত্রীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হয়।

নিবীড় আবাসিক এলাকার প্রাক্তন সভাপতি ২৭২ নং প্লটের বাসিন্দা ও সরকারি এম এ মজিদ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খান মোঃ রওশন আলী অভিযোগ করে খুলনা গেজেটকে বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ উক্ত সড়কটি সংস্কারের অভাবে আবাসিক এলাকায় বসবাসকারীদের অবর্ননীয় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসূমে আমাদেরকে জুতা হাতে নিয়ে উক্ত সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এছাড়া সড়কটিতে রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকার কারণে সন্ধার পর অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে এবং চলাচল দুর্ভোগের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। চুরি-ছিনতাইয়েও আতংক থাকে। তিনি আরো বলেন, নিবীড় আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী প্লট মালিকেরা প্রতি বছর সিটি কর্পোরেশনকে হিউজ পরিমাণ হোল্ডিং ট্রাক্স প্রদান করে থাকে অথচ সেই তুলনায় আবাসিক এলাকায় বসবাসকারীরা সিটি কর্পোরেশনের পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছে না। আবাসিক এলাকায় পয়ঃনিস্কাশনের কোন সু-ব্যবস্থা নেই। রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। পুরো আবাসিক এলাকায় মাত্র ২০ টি লাইটের ব্যবস্থা রয়েছে, যার ১০ টি প্রায়শই অকেজো থাকে। আবাসিক এলাকার আভ্যন্তরীণ সড়কগুলোও চলাচলের অযোগ্য। আবাসিক এলাকায় অবস্থিত মসজিদে যাতায়াতের সড়কটিরও বেহাল অবস্থা। বর্তমানে হাঁটু সমান পানি ডিঙ্গিয়ে মুসল্লীদের নামাজ আদায় করতে হচ্ছে। খান রওশন আলী আরো বলেন, যে ওয়াসার পানির লাইন সরবরাহের জন্য ভালো রাস্তা খুঁড়ে চলাচলে দূর্ভোগ তৈরি করা হলো অথচ সেই ওয়াসার পানি আবাসিক এলাকার প্লটগুলিতে অদ্যাবধি সরবরাহ করা হয়নি।

স্থানীয় ২ নং ওয়ার্ড কমিশনার মোঃ সাইফুল ইসলাম খুলনা গেজেটকে বলেন, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) তাড়াহুড়া করে প্লট বরাদ্দ করে থাকে। পরবর্তীতে এ সকল আবাসিক এলাকার দায়ভার সিটি করপোরেশনকে বহন করতে হয়। তিনি বলেন, খুলনা যশোর মহাসড়ক থেকে কেডিএ নিবীড় আবাসিক এলাকায় প্রবেশের ১কিঃ মিঃ সড়ক সংস্কারের প্রস্তাবনা ইতিমধ্যে খুলনা সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরে খুলনা সিটি করপোরেশন ১৩’শ কোটি টাকার ড্রেন, কালভার্ট, সড়ক সংস্কার, সড়কের উন্নয়নসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ করবে। এ সকল কাজের সঙ্গে উক্ত সড়কসহ আমার ওয়ার্ডের আরো ২ টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের টেন্ডার হবে। যেটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া উক্ত সড়কটির জন্য আমি আলাদা একটি প্রকল্প তৈরি করে রেখেছি।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!