শেখ আবুল কাশেম। খুলনা নগরীর পশ্চিম বানিয়াখামারের হাজি পরিবারের সন্তান। তিনি ১৯৭৭ সালে খুলনা পৌরসভার কমিশনার। খুলনা চেম্বারের সভাপতি। ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় খুলনা নগর জাপার সাধারণ সম্পাদক। হত্যার ২৬ বছর পর আজ সোমবার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলার রায় হয়। রায়ে বিচারক উল্লেখ করেন-শেখ কাশেম মার্ডার কেসের সঙ্গে কেস মার্ডার নামক ধারণা বাস্তবতা পেয়েছে। ১৯৯৫ সালের ২৫ এপ্রিল দুপুরে খুলনা থানার প্রায় সন্নিকটে তিনি খুন হন। ১৯৭০ সালের এপ্রিল মাসে তার জৈষ্ঠ্য ভ্রাতা শেখ আবুল খায়ের কেসিসি মার্কেটের কাছে ছুরিকাঘাতে নিহত হন।
ট্রাইব্যুনালের জজ মোঃ সাইফুজ্জামান হিরো আজ দুপুর পৌনে ১২টায় এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। তিনি রায়ে উল্লেখ করেন-শেখ আবুল কাশেম এখানকার প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। খুলনা চেম্বারের সভাপতি ছাড়াও তিনি নগর জাপার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। খুলনা থানার সন্নিকটে নির্মম ও নৃশংসভাবে শেখ আবুল কাশেম হত্যাকান্ডের শিকার, সেই থেকেই আলোচিত। দীর্ঘ ২৬ বছরের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া আলোচিত চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের মধ্যে একটি। রায়ে তিনি আরও উল্লেখ করেন- ২৬ বছরে এ মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া নজিরবিহীন দুঃখজনক। বিচার বিভাগের জন্য লজ্জাজনক বিষয় তাতে কোন সন্দেহ নেই। মামলাটি কেন বিচার নিষ্পত্তি হতে এত দীর্ঘ বিলম্ব হলো সেটি গবেষণার জন্য পৃথক কেস স্টাডি হতে পারে। এ মার্ডার কেসের সঙ্গে সঙ্গে কেস মার্ডার নামক ট্রাইবুন্যাল আরেকটি ধারণা বাস্তবতা পেয়েছে।
আদালতের সূত্র জানান, ২০১৮ সালের ২ আগস্ট হাইকোর্টের ভ্যাকেট রুল নিষ্পত্তি করে স্টে আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। বিচারপতি মনিরুল ইসলাম চৌধূরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্টে আদেশ প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। এ আদেশ খুলনায় এসে পৌছায় এ বছরের ৩ জানুয়ারি। ২৬ জানুয়ারি থেকে খুলনার ট্রাইব্যুনালে এ বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। মামলার বাদী রূপসা উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের অধিবাসী নিহতের নিকটাত্মীয় শেখ আলমগীর হোসেন ইতোমধ্যেই ইন্তেকাল করেছেন।
নিঃশব্দ- নিরবতা ও কঠোর পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে চট্টগ্রাম জেলার পূর্ব ফটিকছাড়ি গ্রামের আবুল হোসেনের পুত্র পলাতক আসামী মোঃ তারিক হোসেনের মৃত্যুদন্ডাদেশ দেওয়া হয়। সাক্ষীরা পরষ্পর বিরোধী সাক্ষী দেওয়ায় সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফফার বিশ্বাস, জাপা মনোনীত খুলনার মেয়র প্রার্থী মুশফিকুর রহমান মুশফিকসহ বাকি আসামীরা খালাস পায়। এ মামলার অন্যতম আসামী খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ডেপুটি মেয়র ইকতিয়ার উদ্দিন বাবলু ও জলিল টাওয়ারের মালিক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন।