সাতক্ষীরায় নিখোঁজ হওয়ার ১৯ মাস পর কালিগঞ্জের একটি মুরগির খামারের ময়লার স্তুপ থেকে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটি কালিগঞ্জ উপজেলার কুশলিয়া ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী জেসমিন বেগম। স্বামীর হাতের ব্রেসলেট দেখে তাকে শনাক্ত করেছেন জেসমিন বেগম। তবে পুলিশ বলছে ডিএনএ টেষ্টের পর জেসমিন বেগমের দাবির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২ মে) কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের মনিষ দাশের বাড়ির পাশের বাগান সংলগ্ন মুরগির খামারের ময়লার স্তুপ থেকে কঙ্কালটি উদ্ধার করে পুলিশ। কঙ্কাল উদ্ধারের খবর পেয়ে স্ত্রী জেসমিন বেগম ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামীর হাতের ব্রেসলেট দেখে তাকে শনাক্ত করেন। তবে বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে কালিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইদ্রিস আলী।
এদিকে, এই কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চাচাই গ্রামের রাশেদ গাজীর ছেলে ও ইসমাইল হোসেনের বন্ধু নাজমুল হোসেন ওরফে শিমুল (৩৫) কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। পরে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগেও ইসমাইল হোসেনের মিসিং ডায়েরির সূত্র ধরে র্যাব-৬ এর সদস্যরা নাজমুল হোসেন ওরফে শিমুলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক সিরাজ, বাবলু, পীযূষ, নূরসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বিষ্ণুপুর গ্রামের মনিষ বাবুর বাড়ির পাশের বাগানের ময়লার মধ্যে একটি মাথার খুলি দেখতে পান তারা। বিষয়টি পাশে ধানকাটা শ্রমিকদের জানালে তারা এসে ময়লা সরিয়ে একটি মানুষের কঙ্কাল দেখতে পেয়ে বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে জানান। পরে কালিগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কঙ্কালটি উদ্ধার করে।
এদিকে, কঙ্কাল উদ্ধারের খবর পেয়ে নিখোঁজ ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী জেসমিন বেগম ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাতের ব্রেসলেট দেখে লাশটি তার স্বামীর বলে দাবি করেন। এসময় স্থানীয় গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে ভীড় করে। পরে দুপুর ১টার দিকে সাতক্ষীরা থেকে পিবিআই, সিআইডি, ডিবি পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, মনোহরপুর গ্রামের জামাত আলীর ছেলে ইসমাইল এবং চাচাই গ্রামের রাশেদ গাজীর ছেলে নাজমুল হোসেন শিমুল এক সঙ্গে বিভিন্ন ইট ভাটায় কাজ করাসহ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো। হঠাৎ করে ইসমাইল হোসেন নিখোঁজ হওয়ায় তার স্ত্রী জেসমিন বেগম ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কালিগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
এ ব্যাপারে পুলিশ পরিদর্শক ইদ্রিস আলী জানান, কঞ্চালের হাতের ব্রেসলেট দেখে কঙ্কালটি তার স্বামীর বলে দাবি করেছেন জেসমিন বেগম। কঙ্কালটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে প্ররণ করা হয়েছে। কঙ্কালটি জেসমিন বেগমের নিখোঁজ স্বামী ইসমাইল হোসেনের কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ টেষ্ট করার জন্য আমরা ঢাকায় পাঠাবো। ডিএনএ টেষ্টের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে তিনি জানান। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম