খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ পৌষ, ১৪৩১ | ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  আরও ৬০ দিন বাড়ল সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা
  রমজান ও ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানাল আরব আমিরাত
  দেশে একজনের শরীরে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত : আইইডিসিআর

কালিগঞ্জের ধর্মীয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় ভাড়া বাসায় হেফজখানা খুলে কোমলমতী শিক্ষার্থীকে দীর্ঘদিন ধরে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে কালিগঞ্জ উপজেলার বরেয়া মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক আবু সাদ এর বিরুদ্ধে। বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করায় বৃহষ্পতিবার (১৯ মে) দুপুরে সস্ত্রীক আত্মগোপন করেছেন ওই শিক্ষক।

শিক্ষক আবু সাদ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের জাহাজঘাটা এলাকার ফজলুল হকের ছেলে।

বরেয়া গ্রামের এক মাছের ঘেরের মালিক জানান, তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট মেয়ে কাজী আলীউদ্দিন ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। আট মাস আগে ছোট ছেলেকে (১১) বরেয়া গ্রামের ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা কামাল হোসেনের ভাড়াটিয়া ও বরেয়া মিলনী মাধ্যমিক বিদ্য্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক আবু সাদ এর হেফজখানায় এক হাজার টাকা মাসিক বেতনে পড়াশুনা করার জন্য ভর্তি করান। বরেয়া মিলনী মাধ্যমিক বিদ্য্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আবু মুছার ছেলে ইলিয়াস হোসেন ও সহকারি শিক্ষক হাসানুজ্জামানের ছেলে নাঈম ওই হেফজখানায় পড়াশুনা করতো। তিন মাস যাবৎ ওই শিক্ষক জাফরপুর গ্রামের চৌকিদার আব্দুল গফফারের বাড়ির দোতলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে সেখানে হেফজোখানা পরিচালনা করে আসছেন।

ওই ঘের মালিকের অভিযোগ, হেফজোখানায় ভর্তি করার কিছুদিন যেতে না যেতেই তার ছেলেকে গভীর রাতে কৌশলে শৌচাগারে ডেকে নিয়ে বলাৎকার করতো শিক্ষক আবু সাদ। বিষয়টি কাউকে জানলেও খুন করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো। যৌন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বুধবার বলাৎকারের বিষয়টি তাকে ও পরিবারের সদস্যদের অবহিত করে ছেলে। বিষয়টি তিনি বৃহষ্পতিবার স্থানীয় ইউপি সদস্য এনাম হোসেন ও তারালী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোটকে অবহিত করেন। ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ি ইউপি সদস্য এনাম তাকে ও তার ছেলেকে থানায় নিয়ে যান। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মোস্তফা বিস্তারিত জানার পর উপপরিদর্শক আবু সাঈদকে জাফরপুর গ্রামে পাঠান। বিষয়টি জানতে পেরে ওই শিক্ষক কৌশলে পালিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর আবু সাদ এর দ্বিতীয় স্ত্রী মমতাজ তার তিন মাসের সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসা ছেড়ে চলে যান।

বরেয়া মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আবু মুসা জানান, সহকর্মী আবু সাদ এর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের ঘটনার সত্যতা অন্যদের কাছ থেকে জানতে পেরে নিজের ছেলেকে কয়েকদিন আগে হেফজখানা থেকে ছাড়িয়ে এনেছেন। বলাৎকারের ঘটনা সত্য হলে তিনি ওই শিক্ষকের দৃষান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

বরেয়া মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত কুমার বৈদ্য জানান, বিষয়টি তার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশি¬ষ্ট না। তবে কেউ যদি শিক্ষক আবু সাদ এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ আনেন সেক্ষেত্রে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেই ঘটনার সত্যত্যা যাঁচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তারালী ইউপি চেয়ারম্যান ও কালিগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোট জানান, বৃহষ্পতিবার সকালে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ভিকটিম ও তার বাবাকে থানায় পাঠিয়ে দেন। তবে ভুলবশতঃ লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় মামলা রেকর্ড করা যায়নি। আজ শুক্রবার ভিকটিমকে নিয়ে তার বাবা আবারো থানায় এজাহার দিতে গেছে।

এ ব্যাপারে বরেয়া মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক আবু সাদ এর সঙ্গে বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে তার মোবাইল ফোনে কয়েকবার কথা বলার চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

কালিগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার পিএসআই মনির জানান, ছেলের অভিভাবক অভিযোগ দিতে থানায় এসছেন। লিখিত অভিযোগ দিলে সেটি নিয়মিত মামলা হিসাবে রেকর্ড করা হবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!