ঘূর্নিঝড় আম্ফান ও ইয়াসের প্রভাবে ভেঙ্গে যাওয়া সাতক্ষীরায় আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ সংষ্কার ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে হাঁটু পানিতে দাড়িয়ে মানববন্ধন করেছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) বেলা ১১টায় প্রতাপনগর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে গ্রামীন টাওয়ারের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী আব্দুর সাত্তারের সভাপতিত্বে ও শিক্ষার্থী হুজাইফা আল- আমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অংশ নেয় মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী, নারী, পুরুষ, শিশুসহ প্রতাপনগর ইউনিয়নের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘গত বছরের ২০ মে আম্পানে বাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে ভেসে যায় ফসল, গবাদি পশু, ঘর বাড়িসহ কোটি কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পুরো ইউনিয়নের অবকাঠমো। নয় মাস ধরে সেই ক্ষত কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছিল এই উপকূলের মানুষ। কিন্তু আম্পানের ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আগেই ইয়াসের আঘাতে ফের বিধ্বস্ত হয় পুরো ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের ১৭ গ্রামের ৫ হাজার পরিবারের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ আজও পানিবন্দি। কাজ নেই, খাবার নেই। কেউ মারা গেলে কবর দেওয়ার পর্যন্ত জায়গা নেই। ধনী-গরিব সবাই সমান হয়ে গেছে। এসব এলাকায় খাবার পানির তীব্র সংকটে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। রান্নার ব্যবস্থা না থাকায় অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে বহু মানুষ।’
তারা আরো বলেন, ‘আম্ফানের পানি সরেছে তিন মাস হলো। এর মধ্যে আবারোও নতুন করে বাঁধ ভেঙ্গে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। একটা ক্ষত কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার আঘাত। ইয়াসের প্রায় ২০দিন পার হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো মূল ভাঙ্গন পয়েন্ট সংষ্কার করা হয়নি। এখনো ইউনিয়নে জোয়ার-ভাটা চলছে। দ্রুত স্থায়ী টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করা হলে এই এলাকা মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে।’
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে শিক্ষিকা নিলুফা ইয়াসমিন (রাণু) বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চলছে। এক বছরে বাজেটের পর বাজেট বেড়েছে। কিন্তু উপকূলের বেড়িবাঁধ উঁচু এখনো হয়নি। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায় উপকূলবাসী। ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেটের কারণে উপকূল জুড়ে মানুষের এই দূর্ভোগ। নদীতে জোয়ার বাড়লে ভাঙ্গছে বাঁধ। তিনি দ্রুত প্রতাপনগর ইউনিয়নের স্থায়ী ও টেকসই বেড়ি বাঁধ নির্মাণের ব্যাবস্থা গ্রহণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি