খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২০ মে, ২০২৪

Breaking News

  ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত : রয়টার্স; জীবিত কারও সন্ধান মেলেনি : রেড ক্রিসেন্ট

কাজ-কর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের

সাজ্জাদুল ইসলাম

নগরীর পাঁচ নাম্বার লঞ্চঘাট এলাকা। পাশেই গ্রীনল্যান্ড-ই ব্লকের বস্তি। এ বস্তিতে বাস করে শহরের নিন্ম আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা। কঠোর লকডাউনের কারণে কাজ-কর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের।

২৮ বছর বয়সী ২ সন্তানের জননী হামিদা বেগম ৬ বছর থেকে বসবাস করছেন এই বস্তিতে। স্বামী আব্দুল হাই ৫নং ঘাটে কুলির কাজ করতেন। লকডাউনের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো রকমে দিন পার হচ্ছে তাদের।

কথা হলো বস্তির আরো একজন নারী রিনা খাতুনের সাথে। টিনের ছাউনি আর বাশেঁর বেড়া দিয়ে তৈরী ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করেন তিনি। বলছিলেন, তার স্বামী কুরবান সরদার লেবারি করেন, লকডাউনের ফলে তার কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে ৫ সদস্যের এই পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি।

রিনা খাতুনের পাশের ঘরটিতে বাস করেন রং মিস্ত্রি আব্দুর রহমান। তিনি জানান, লকডাউনের পর থেকে কাজ বন্ধ তার। কাজ করে কিছু টাকা গুছিয়ে ছিলেন, এখন গোছানো সেই টাকা দিয়েই সংসার চলছে। গত বছরের লকডাউনে ত্রাণ সহায়তা পেলেও এবারের লকডাউনে এখনো পর্যন্ত তা পাননি।

একই অবস্থা ভ্যান চালক বাদশা মিয়ার। তিনি বলেন, মালামাল পরিবহনের কাজ করতেন একটি ফার্ণিচারের দোকানে। মালামাল টানতে ভ্যান চালাতেন তিনি। কিন্তু লকডাউনের কারণে ফার্নিচারের দোকান বন্ধ হ’য়ে যাওয়ায় কাজ হারিয়েছেন। এখন অনেক কষ্টে সংসার চলছে তার।

কথা হয় বস্তির আরেক বাসিন্দা হাফিজা বেগমের সাথে। তিনি সিডিসি সংগঠনের এই এলাকার নারী নেত্রী। তিনি জানান, ২১নং ওয়ার্ডের আওতাধীন এই বস্তিতে প্রায় ১৫০টি পরিবারের বসবাস। এখানে বসবাসকারী সকলেই শ্রম পেশার সাথে জড়িত। লকডাউনের কারনে কর্মহীন হয়েপড়া প্রতিটি পরিবারের অবস্থাই খুব খারাপ।

তিনি আরো জানান, গত বছরে লকডাউনের পরে বিভিন্ন সংগঠন ও সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা দিলেও, এ বছর দুই ধাপে লকডাউনে এখনো পর্যন্ত কোনো ত্রাণ সহায়তা পাননি তারা।

গ্রীনল্যান্ড নামক এই বস্তির নামটা সুন্দর হলেও এখানের বসবাসকারী মানুষ গুলোর জীবনমানে সুন্দরের ছোয়া নেই । ছোটো ছোটো সরু অলি গলির এই ঘিঞ্জি পরিবেশের বস্তিতে বাস করেন ভ্যান চালক, রিক্সা চালক, রং মিস্ত্রি, কুলি পেশার শ্রমজীবি মানুষ। লকডাউনের কারণে অনেকেই তাদের কর্মসংস্থান হারিয়েছেন।

‘দিন এনে দিন খাওয়া’ এই মানুষগুলোর দিন কাটছে দীনহীন ভাবে। তারা এখন দিন গুনছে লকডাউন খোলার অপেক্ষায়, পথের পানে তাকিয়ে রয়েছে ত্রাণ সহায়তায় আশায়।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!