যশোরের মণিরামপুরে কলেজ ছাত্র বোরাহানুল কবীরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তপন কুমার নন্দীসহ দুই দারোগাকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রত্যাহার হওয়া অপর কর্মকর্তা হলেন, রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই ওয়াসীম। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) তাদেরকে যশোর পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়।
এদিকে, কলেজ ছাত্র হত্যার ঘটনায় আটক মামলার প্রধান আসামী নাঈম হোসেনকে বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) শুনানি শেষে আদালত থেকে একদিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন, মণিরামপুর থানার ওসি (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তপন কুমার নন্দী নিজেই।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, গত শনিবার দুপুরের দিকে মোটরসাইকেল ছিনতাই চেষ্টার অপবাদে উপজেলার খালিয়া এলাকায় তাদের সন্তানকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়। খবর পেয়ে পাশ্ববর্তী রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় মরণাপন্ন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করলেও চিকিৎসা না করিয়ে হাতকড়া পরিয়ে পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের মধ্যে মাটিতে বসিয়ে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে গিয়ে জানায় যে তাদের সন্তান চোর-ডাকাত নয়, সে মণিরামপুর সরকারি কলেজের একজন মেধাবী ছাত্র। সম্প্রতি সে মানষিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।
এ কথা বলার পরেও পুলিশের মন গলেনি। তাদেরকে বলা হয়, মানষিক রোগীর কাগজ-পত্র আনতে হবে। ততক্ষণে তাদের সন্তান ওই পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে প্রায় মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। এক পর্যায় বাড়ি থেকে কাগজ নিয়ে তাদের দেখানোর পর ওরা ছেড়ে দিলে এ্যাম্বুলেন্সে করে প্রথমে মণিরামপুর হাসপাতালে নেয়া হয়। এসময় তার অবস্থার অবনতি হলে যশোরে স্থানান্তর করলে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। পরের দিন ভোর ৪টার দিকে তাকে নিয়ে ঢাকা পৌঁছনো হলেও প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু ঘটে।
পুলিশের দায়িত্বহীনতার কারণে মেধাবী কলেজ ছাত্র বোরহানুল কবীরের মৃত্যুর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী মণিরামপুর থানা ঘেরাওসহ রাজপথে নেমে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি