সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। সোমবার (১৫ মার্চ) সকাল ৯ টায় কলারোয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে এই তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন, ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, যুগ্ম সচিব, সাইদুন নবী চৌধুরী, নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের উপ-সচিব আব্দুল হালিম এবং নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব বিপ্লব দেবনাথ।
তদন্ত কর্মকর্তারা নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী রির্টানিং অফিসার, সহকারী রির্টানিং অফিসার, থানার অফিসার ইনচার্জ, কেন্দ্রের পুলিশ ইনচার্জ, প্রিজাইডিং অফিসার, প্রতিটি কেন্দ্রের একজন করে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারসহ আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। একই সাথে তাদের লিখিত জবানবন্দীও লিপিবদ্ধ করা হয়।
এদিকে তদন্তের অংশ হিসাবে আগামীকাল (১৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় সাতক্ষীরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণের শুনানী গ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে।
জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ নাজমুল কবির জানান, গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পরাজিত কয়েকজন প্রার্থী সংক্ষুব্ধ হয়ে পুনঃর্নিবাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন। এই আবেদন নিষ্পত্তি হতে বিলম্ব হওয়ায় তারা হাইকোর্টে রিট করেন। এই রিটের প্রেক্ষিতে ১ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার কথা রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী এই তদন্ত চলছে। তিনি আরও জানান, পর্যায়ক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট এবং অন্যান্যদেরও জবানবন্দী গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জানুয়ারী ৩য় ধাপে অনুষ্ঠিত কলারোয়া পৌরসভার নির্বাচনে স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে ব্যাপক অনিয়ম, সহিংসতা, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, তিনটি ব্যালটের মধ্যে মেয়র প্রার্থীর ব্যালট ভোটারকে না দেওয়া, কেন্দ্র দখল করে ব্যালটে সিল মারার ঘটনায় বিএনপি ও এক স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীসহ একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী নজির বিহীন ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দেন।
এ কারণে গত ৬ ফেব্রুয়ারী বেসরকারিভাবে ঘোষিত কলারোয়া সহ তিনটি পৌরসভার ফলাফল স্থগিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। অনিয়মের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রতি অনাস্থা জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তাসহ অন্যান্যদের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী ২৫ প্রার্থী। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে কোন প্রতিকার না পেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন কাউন্সিলর প্রার্থী এএসএম এনায়েতউল্লাহ খানসহ অন্যান্য প্রার্থীরা।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি