সাতক্ষীরার কলারোয়ায় আলোচিত দুই সন্তান ও স্বামী-স্ত্রীসহ চার খুনের ঘটনায় আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি পুলিশ। মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সকালে গ্রেপ্তারের পর বিকালে আদালতের মাধ্যেমে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার আদালতে ১০ দিনের রিমোন্ডের আবেদন জানাবেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সিআইডি পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার খলিসা গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক, একই গ্রামের কাশেম ঢালীর ছেলে পুলিশের কথিত সোর্স আব্দুল মালেক ও ধানরঘোরা গ্রামের সামছুদ্দিনের ছেলে আসাদুল ইসলাম।
জানা যায়, কলারোয়ার চার খুনের প্রধান সন্দেহভাজন নিহত শাহিনুরের ছোট ভাই রায়হানুলেকে আটক করে সিআইডি পুলিশ। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর তার দেয়া তথ্যমতে মঙ্গলবার সকালে রাজ্জাক, মালেক ও আসাদুলকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। বিকালে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
কলারোয়া আদালতের পুলিশ উপ পরিদর্শক কায়েস মাহমুদ জানান, আসামীদের আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রিমান্ডে নেয়া আসামী রায়হানুল ইসলামের জবানবন্দি অনুযায়ী ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার আদালতে ১০ দিনের রিমোন্ডের আবেদন জানানো হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সিআইডি সাতক্ষীরার বিশেষ পুলিশ সুপার আনিচুর রহমান তিন জনের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার আদালতে ১০ দিনের রিমোন্ডের আবেদন জানানো হবে।
এদিকে সিআইডির ঢাকার একটি টিম সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করেছেন। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসী গ্রামে ঘটনাস্থলে দিনব্যাপী এই কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেন সিআইডি ঢাকা জোনের এডি ডিআইজি ওমর ফারুক। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মীর্জা সালাউদ্দিনসহ পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) ভোররাতে কোন একসময় দুর্বৃত্তারা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামের মৃত শাহাজান আলীর ছেলে হ্যাচারি মালিক শাহিনুর রহমানের ঘরে ঢুকে মোঃ শাহীনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), ৯ বছরের শিশু ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী ও ৬ বছরের শিশু কন্যা তাসমিন সুলতানাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। রাতে নিহত শাহিনুরের শাশুড়ি ময়না খাতুন বাদি হয়ে কলারোয়া থানায় অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা (নং ১৪) দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডি পুলিশকে। ঘটনার দিনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় নিহতের ছোট ভাই রায়হানুলকে। পরের দিন রায়হানুলকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫দিনের রিমান্ডে নিয়েছে সিআইডি। রায়হানুলের দেয়া তথ্যমতে পুলিশ উল্লেখিত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।