খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ আষাঢ়, ১৪৩১ | ১৭ জুন, ২০২৪

Breaking News

  টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপাকে আয়ারল্যান্ড
  সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত ঈদের ছুটির পর : দুদক আইনজীবী
  সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এলেও কথা বলছে না সরকার : ফখরুল

কলকাতার খালে নর্দমায় তল্লাশি, কোথাও মেলেনি আনারের লাশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আনোয়ারুল আজীমের দেহাংশের খোঁজে গতকাল শুক্রবার কলকাতার একাধিক খালে তল্লাশি চালায় সেখানকার পুলিশ। বাংলাদেশের এই সংসদ সদস্যকে খুন করার পর যে ‘কসাই’ তাঁর দেহ টুকরা করেছিলেন বলে অভিযোগ, তাঁকে বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি। তাঁর নাম জিহাদ হাওলাদার। বারাসাতের আদালত গতকাল তাঁর ১২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

জিহাদ হাওলাদারের বাড়ি খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানার বারাকপুরে।

খুলনায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পেশায় কসাই জিহাদ একসময় খুলনার ফুলতলার কুখ্যাত সন্ত্রাসী শিমুল ভূঁইয়ার সহযোগী হিসেবে এখানে কাজ করতেন। কলকাতা পুলিশ সেখানকার গণমাধ্যমকে বলেছে, জিহাদ অবৈধভাবে ভারতের মুম্বাইয়ে বাস করতেন। সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে হত্যার এক মাস আগে জিহাদকে কলকাতায় এনে রাখেন শিমুল ভূঁইয়া। যিনি সৈয়দ আমানুল্লাহ নামে পাসপোর্ট তৈরি করে কলকাতায় গিয়েছিলেন। আমানুল্লাহ নামধারী এই শিমুল ভূঁইয়াই মূল খুনি বলে দাবি করছে বাংলাদেশ ও কলকাতার পুলিশ।

কলকাতার সিআইডি জানতে পেরেছে, খুনের পর লাশ গুমের জন্য খণ্ডিত করার কাজে কসাই জিহাদকে ব্যবহার করা হয়েছে। পরে ব্যাগে করে নিয়ে লাশের খণ্ডিত অংশগুলো বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

সিআইডি সূত্র জানায়, গতকাল দুপুরে বারাসাতের আদালতে রিমান্ড মঞ্জুরের পর জিহাদ হাওলাদারকে নিয়ে সিআইডি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ভাঙ্গরে যায়। সেখানে একটি খালে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাশের সন্ধানে তল্লাশি চালায়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কিছু পাওয়া যায়নি।

সিসি ক্যামেরার আরেকটি ফুটেজে দেখা গেছে, দুই ব্যক্তি ওই ফ্ল্যাট থেকে বের হচ্ছেন। তিনি নীল রঙের একটি ট্রলি ব্যাগ নিয়ে প্রথম ফ্ল্যাট থেকে বের হন। তাঁর পেছনে একজন তিনটি ছোট ব্যাগ নিয়ে বের হন। ওই ফুটেজে কসাই জিহাদ ও শিমুলকে দেখা গেছে।

এদিকে বাংলাদেশ পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, কলকাতার জিরান গাচ্ছি ও হাতিশালা এলাকার পার্শ্ববর্তী কেষ্টপুর খালে লাশের খণ্ডিত কিছু অংশ ফেলা হয়েছে বলে ঢাকায় গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য পাওয়া গেছে। এই কেস্টপুর খাল যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজীমকে খুন করা হয়েছে, ওই এলাকা দিয়েও প্রবাহিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম ১২ মে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতের কলকাতা যান। আট দিন নিখোঁজ থাকার পর ২২ মে তাঁর খুন হওয়ার বিষয়টি দুই দেশের পুলিশ নিশ্চিত করে। এই ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে যাঁকে শনাক্ত করেছে পুলিশ, তিনি আনোয়ারুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন। কলকাতার নিউ টাউনে আক্তারুজ্জামানের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে আনোয়ারুলকে খুন করা হয়।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ওই ফ্ল্যাটের বাইরেও কলকাতার চিনারপার্ক এলাকায় আক্তারুজ্জামানের ভাড়া করা আরেকটি ফ্ল্যাট রয়েছে। যেটি ছয় বছর আগে তিনি ভাড়া করেছেন। নিহত সংসদ সদস্যের ব্যবহার করা মুঠোফোনের সূত্র ধরে কলকাতার পুলিশ পিন্টু দাস নামের এক ব্যক্তিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পিন্টু দাস পুলিশকে বলেছেন, কসাই জিহাদ এক-দুই মাস ধরে চিনারপার্কের ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন।

পুলিশ ধারণা করছে, ট্রলি ব্যাগে করে লাশের টুকরা সরানো হয়েছে। জিহাদকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল লাশের সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালায় কলকাতার সিআইডি পুলিশ।

সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা গেল

আনোয়ারুল আজীমকে নিউ টাউনের যে ফ্ল্যাটে খুন করা হয় বলে কলকাতার পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, সেখানকার ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করেছে সেখানকার তদন্তকারীরা। এই বিষয়ে নিউটাউন থানায় কলকাতার পুলিশের করা এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এজাহারে বলা হয়, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম, সৈয়দ আমানুল্লাহ (শিমুল ভূঁইয়া) ও ফয়সাল আলী সাজী একসঙ্গে ১৩ মে বেলা ৩টা ১০ মিনিটে ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন। এর পর থেকে আনোয়ারুল আজীমের বের হওয়ার কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশ তথ্য পেয়েছে, ফ্ল্যাটে প্রবেশের কিছুক্ষণ পরই আনোয়ারুলকে খুন করা হয়।

সিসি ক্যামেরার আরেকটি ফুটেজে দেখা গেছে, দুই ব্যক্তি ওই ফ্ল্যাট থেকে বের হচ্ছেন। তিনি নীল রঙের একটি ট্রলি ব্যাগ নিয়ে প্রথম ফ্ল্যাট থেকে বের হন। তাঁর পেছনে একজন তিনটি ছোট ব্যাগ নিয়ে বের হন। ওই ফুটেজে কসাই জিহাদ ও শিমুলকে দেখা গেছে।

পুলিশ ধারণা করছে, ট্রলি ব্যাগে করে লাশের টুকরা সরানো হয়েছে। জিহাদকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল লাশের সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালায় কলকাতার সিআইডি পুলিশ।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!