মণিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনায় মৃত্যুবরণকারী প্রফুল্ল সরকারের সৎকারে নিকট আত্মীয় স্বজনসহ নিজ ধর্মের কোন প্রতিবেশী এগিয়ে না আসায় তাকওয়া ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীরা তাকে গোসল করিয়ে শ্মশানের চিতা পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন। মানবতার দৃষ্টিকোণে মানুষ মানুষের জন্য এমন নজীর স্থাপন করেছেন করোনায় মৃত্যুবরণকারীদের কাফন-দাফনে নিয়োজিত একদল যুবক। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহল তাদেরকে নানাভাবে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানাযায়, উপজেলার সাতনল খানপুর এলাকার মৃত রতন সরকারের পুত্র প্রফুল্ল সরকার (৬২) করোনায় আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মারা যান। করোনায় পিতার মৃত্যুর পর প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে অনেকটা ভীতির মধ্যে তার দুই ছেলে মরদেহের পাশে থাকলেও সৎকার করতে নিকট আত্মীয়সহ নিজ সম্প্রদায়ের কেউ এগিয়ে আসেনি।
মণিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম ও খানপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী জানান, বিষয়টি তারা জানার পর মৃত প্রফুল্ল সরকারের সৎকারের ব্যবস্থা করতে তৎপর হন।
তাকওয়া ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা ইয়াছিন জানান, সনাতন ধর্মীয় ব্যক্তিদের শ্মশানে নিতে কাউকে পাওয়া যাচ্ছেনা এমন সংবাদ তাদেরকে অবহিত করেন উপজেলা চেয়ারম্যাান নাজমা খানম এবং খানপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী। এক পর্যায় রাত ১০টার দিকে তাদের তাকওয়া ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীরা দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে এক মুসলিম ব্যক্তির ভ্যানযোগে প্রফুল্ল সরকারের মরদেহ পৌর এলাকার তাহেরপুর মহাশ্মশানে নিয়ে যান। এসময় তার সৎকারে সহযোগীতা করতে শ্মশানে আসেন পৌর কাউন্সিলর বাবুলাল চৌধুরী।
এরপর শ্মশান চত্ত্বরের নিদৃষ্ট স্থানে মরদেহের গোসল করিয়ে চিতা পর্যন্ত উঠিয়ে দেন তাকওয়া ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী সদস্যরা। এসময় শ্মশানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোসাব্বিরুল ইসলাম রিফাত, উপজেলা বিএনপি’র যুব বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু।
উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম বলেন, প্রফুল্ল সরকারের করোনায় মৃত্যু হওয়ার কারণে তার সন্তানসহ কয়েকজন স্বজন মরদেহ বাড়িতে নিতে অনিহা প্রকাশ করে। তিনি এমন খবর জানার সাথে সাথে তাকওয়া ফাউন্ডেশনের সদস্যদের খবর দিলে তারাই মরদেহের সৎকারের ব্যবস্থা করেন।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি