খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪

Breaking News

  হেলিকপ্টার দূর্ঘটনায় নিঁখোজ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি
  বাজারে থাকা এসএমসি প্লাসের সব ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস প্রত্যাহারের নির্দেশ, বাজারজাতকারীকে ১৬ লাক টাকা জরিমানা
  ৭ ব্যক্তিকে জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
ঝরে পড়তে পারে অনেক শিক্ষার্থী

করোনায় বিপাকে খুলনার বেসরকারি পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে করোনা ভাইরাসের প্রভাবের কারণে চলতি বছরের মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে বন্ধ হতে শুরু করেছে খুলনার বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলো। প্রায় চার মাস ধরে প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে মালিকপক্ষ। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা না দিতে পারায় বিব্রতকর অবস্থায় আছে। সরকারের পক্ষ থেকে খুব দ্রুত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সার্বিক সহযোগিতাসহ শিক্ষার্থীদের অতিস্বত্তর পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ প্রাইভেট পলিটেকনিক ইন্টারপ্রেনিয়র এসোসিয়েশন খুলনার সূত্র জানায়, খুলনা জেলায় বর্তমানে ২৮টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রয়েছে। শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ১০ হাজার। প্রতি বছরই এসব প্রতিষ্ঠানে আড়াই থেকে ৩ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান আয়ের উৎস। তবে দীর্ঘদিন টিউশন ফি না দেওয়ায় বর্তমানে হাতে গোনা কয়েকটি পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটের অফিস কার্যক্রম চললেও কোন প্রতিষ্ঠানই শতভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন দিতে পারছেন না।

এদিকে অনুসন্ধানে জানা যায়, নগরীর দৌলতপুর ও খালিশপুর এলাকার অনেক প্রতিষ্ঠানই মার্চ মাস থেকে অফিস কার্যক্রম বন্ধ রাখার পাশাপাশি অবৈতনিক ছুটি দিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এমনকি অনলাইনে কোন ক্লাস কার্যক্রমও করছেন না। তাছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা কার্যক্রমের সুবিধা না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের সাথে দূরত্বের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে শিক্ষা জীবন থেকে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার আশংকা রয়েছে। এদিকে যে সকল প্রতিষ্ঠানের মালিকদের ভাড়া করা ভবন, হোষ্টেল রয়েছে তারা এই করোনা পরিস্থিতিতে সব থেকে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। এসব সংকট কাটিয়ে সামনে এগিয়ে চলা এখন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ।

এ বিষয়ে খানজাহান আলী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ইঞ্জি: মো: আবুল কালাম আজাদ খুলনা গেজেটকে বলেন, করোনার প্রভাবে এই অঞ্চলের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মন্দাভাব চলছে। যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করায় সেগুলো নষ্টের পথে। প্রতিষ্ঠানগুলোর বেতন শতভাগ পরিশোধ করা যাচ্ছে না। বন্ধ রয়েছে সকল ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম।


সিটি পলিটেকটিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ এস এম জাহাঙ্গীর আলম খুলনা গেজেটকে জানান, টিউশন ফি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের প্রধান মাধ্যম। কিন্তু গত মার্চ থেকে শিক্ষার্থীরা এটা বন্ধ করে দিয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান মালিকদের বাসা ভাড়া, বেতনসহ আনুষাঙ্গিক খরচ দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি শিক্ষার্থীদের অনলাইনের ক্লাসও নিয়মিত নেওয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর গত ৪ মাসে আয় নেই বললেই চলে। সব মিলিয়ে এখন বেসরকারি পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটগুলো এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করে টিকে থাকাটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বেসরকারি পলিটেক ইনস্টিটিউটগুলোর দু:সময়ে এগিয়ে আসা উচিত।

ম্যানগ্রোভ ইনস্টিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) চেয়ারম্যান এস এম সাইফুল ইসলাম খুলনা গেজেটকে বলেন, শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য কারিগরি বোর্ডকে জানানো হয়েছে। তবে এখনও কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘসময় প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় প্রতিষ্ঠান মালিক এবং শিক্ষার্থী দুই পক্ষই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের ভাড়া, যন্ত্রপাতি সচল রাখা, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন অনেক প্রতিষ্ঠানই শতভাগ দিতে পারছে না। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাস নেওয়ার পর পরীক্ষা না নেওয়ায় মূল্যয়ন কমে যাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, বেসরকারি পলিটেক ইনস্টিটিউটের এই দু:সময়ে সরকারি প্রণোদনা না পেলে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়বে।

খুলনা গেজেট / এনআইআর




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!