মহামারী করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্থ প্রকৃত যাত্রা মালিকদের অনুকূলে সরকারি প্রণোদনার অর্থ বরাদ্দ এবং অর্থ বিতরণে ঢাকা শিল্পকলা একাডেমীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের পাশাপাশি তিনদফা দাবীতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। খুলনা, নাটোর, মাগুরা, কুষ্টিয়া ও বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের যাত্রা মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের আয়োজনে মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে মণিরামপুর প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ যাত্রা মালিক সমিতির সভাপতি মোশারফ হোসেন নয়ন।
লিখিত বক্তব্যে দাবী করা হয় যাত্রা শুধুমাত্র বিনোদন নয়, লোকশিক্ষারও বাহন। সাম্য সম্প্রীতি ও অসম্প্রদায়িক চেতনার মধ্যদিয়ে জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি করেছে শিক্ষামূলক অধিকাংশ যাত্রাপালা। কল্যাণমূলক কাজের দাবীদার হয়েও যাত্রাদলগুলো আজ জাতীয় পৃষ্ঠপোষকতা সঠিকভাবে পাচ্ছেনা। এমন দাবীতে ইতিপূর্বে বাংলাদেশ যাত্রা মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনসহ ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। দাবী ফলশ্রæতিতে দেশের প্রায় ৩ হাজার যাত্রাশিল্পী ১০ হাজার টাকা হারে অনুদান পাওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ যাত্রাদলগুলোকে অনুদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীকে নির্দেশনা দেয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে শিল্পকলা একাডেমীর নিবন্ধন-নবায়নকৃত ৭৯টি যাত্রাদলকে ৫০ হাজার টাকা হারে বরাদ্দ করেন এবং একটি করে দেশীয় পালা মঞ্চায়নের নির্দেশনা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে দাবী করা হয় একটি করে পালা মঞ্চায়ন করতে হলে মহড়া, ডেকোরেশন, শিল্পী কূশলীদের বেতনসহ প্রায় ১ লক্ষ টাকার বেশী ব্যয় হবে। যা মরার উপর খাঁড়ার ঘাঁ। মহামারী করোনার কারণে যাত্রা অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় মালিকরা পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা হয়েছেন। দুঃখের বিষয় হলো ১০টি পালা নির্দেশককে পালা মঞ্চায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে ২ লক্ষ টাকা হারে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ করা হয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর অনিয়মের মাধ্যমে নামসর্বস্ব যাত্রা মালিকদের উক্ত বরাদ্দের তালিকায় রাখা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবী সমূহ হলো, ১. অনিয়মের মাধ্যমে যে ১০টি পালা নির্দেশককে নির্বাচন করে ২লক্ষ টাকা হারে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা অবিলম্বে বাতিল সহ পুনরায় প্রকৃত পেশাদারী ও ক্ষতিগ্রস্থ নির্দেশকদের মনোনীত করা হোক। ২. ৭৯টি যাত্রাদলকে যদি পালা মঞ্চায়ন করতে হয় তবে বরাদ্দকৃত ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে দেড়লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিতে হবে। ৩. মহামারী করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সাথে সাথে সারা দেশে অবাধ যাত্রা অনুষ্ঠানের অনুমতি দিতে হবে।
অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রা মালিক সমিতির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের আশরাফ সিদ্দিকী, খুলনার সৌমেন রায়, জলিল হোসেন বাবু, অমরকান্তি রায়, মাগুরার স্বপন পান্ডে, কুতুবুল আলম শাহীন, কুষ্টিয়ার হাবিবুর রহমান, বাগেরহাটের মাখন লাল মন্ডল, নওয়াপাড়ার খোকন সাহা, মণিরামপুরের, দুলাল সাহা, তুষারকান্তি মল্লিক, অবনি মোহন মল্লিক, তপন সরকার, হানিফ প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/কেএম