১৯৭৭ সালে ৬ মার্চ পথচলা শুরু হয়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। ৪৬ বছরের যাত্রাপথে বহু বার বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে এই সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। দেশের অন্য অনেক ট্রেনও বার বার বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত। শুক্রবার সন্ধ্যায় ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে দুর্ঘটনা ঘটেছে। ১৯৭৭ সালের ৬ মার্চ পথচলা শুরু হয়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। ৪৬ বছরের যাত্রাপথে বহু বার বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে এই সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসকে। সূত্র : আনন্দবাজার অনলাইন
২০০২ সালের ১৫ মার্চ দুপুর ২টো ৪০ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর জেলায় হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ৭টি কামরা বেলাইন হয়েছিল। সে বার ১০০ জন যাত্রী জখম হয়েছিলেন।
২০০৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ওড়িশার জাজপুর কেওনঝড় রোডের কাছে বেলাইন হয় এই ট্রেন। কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
২০১২ সালের ১৪ জানুয়ারি লিঙ্গরাজ স্টেশনের কাছে চেন্নাই-হাওড়া করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরায় আগুন লেগেছিল।
২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর ওড়িশার গঞ্জাম জেলায় করমণ্ডলের ধাক্কায় ৬টি হাতির মৃত্যু হয়েছিল।
২০১৫ সালে ১৮ এপ্রিল করমণ্ডলে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল। তবে শুক্রবার যে ভাবে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে করমণ্ডল, তা এই এক্সপ্রেসের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু করমণ্ডল এক্সপ্রেসই নয়, অতীতে দেশের বুকে একাধিক ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাগুলি এক বার ফিরে দেখা হল।
১৯৮১ সালের কথা। সে বছর বিহারের সহরসার কাছে লাইনচ্যুত হয়েছিল একটি যাত্রিবাহী ট্রেন। সেতু পারাপারের সময় বেলাইন হয়ে বাগমতী নদীতে পড়ে গিয়েছিল ট্রেনটি। প্রায় ৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে সরকারি ভাবে মৃতের সংখ্যা ২৩৫ বলা হয়েছিল। কী কারণে দুর্ঘটনা, তা জানা যায়নি। তবে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দুর্ঘটনা বলে দাবি করেছিলেন কেউ কেউ। আবার কেউ কেউ দাবি করেছিলেন প্লাবনের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল।
১৯৯৫ সালে উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদের কাছে দিল্লিগামী পুরুষোত্তম এক্সপ্রেসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছিল কালিন্দী এক্সপ্রেসের। কমপক্ষে ৩৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গরুর সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর ব্রেক ফেল করেছিল কালিন্দী এক্সপ্রেসের। ওই রেলপথেই আসছিল পুরুষোত্তম এক্সপ্রেস। তার জেরেই সংঘর্ষ ঘটে। খন্না ট্রেন বিপর্যয় ১৯৯৮ সালে পঞ্জাবের খন্নার কাছে কলকাতাগামী জম্মু তাওয়াই শিয়ালদা এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়েছিল ফ্রন্টিয়ার গোল্ডেন টেম্পল মেলের। দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গাইসলে ট্রেন বিপর্যয়১৯৯৯ সালে অসমে গাইসলের কাছে ২টি ট্রেনের সংঘর্ষ বেধেছিল। এর জেরে কমপক্ষে ২৯০ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। ২টি ট্রেনেরই গতি বেশি ছিল।
রাজধানী এক্সপ্রেস বিপর্যয়
হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস বেলাইন হয়েছিল ২০০২ সালে। গয়া এবং ডেহরি অন শোন স্টেশনের মধ্যে রফিগঞ্জ স্টেশনের কাছে বেলাইন হয়েছিল ট্রেনটি। মৃত্যু হয়েছিল ১৪০ জনেরও বেশি যাত্রীর।
দুর্ঘটনায় জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস
২০১০ সালের ২৮মে ঝাড়গ্রামের সর্ডিহার রাজাবাঁধ এলাকায় লাইনচ্যুত হয় জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস। সেই সময়ে ডাউন লাইনে উল্টো দিক থেকে আসা একটি মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছিল জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের। এই রেল দুর্ঘটনায় ১৪৮ জন মারা গিয়েছিলেন বলে খবর। দুর্ঘটনার নেপথ্যে যড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছিল।
সাইঁথিয়ায় ২ ট্রেনের সংঘর্ষ
২০১০ সালের ১৯ জুলাই বীরভূমের সাঁইথিয়ায় উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধেছিল বনাঞ্চল এক্সপ্রেসের। প্রায় ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। হাম্পি এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা ২০১২ সালের ২২ মে অন্ধ্রপ্রদেশের কাছে একটি মালগাড়ির সঙ্গে হুবলি-বেঙ্গালুরু হাম্পি এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়েছিল। প্রায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
ইনদওর-পটনা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা
২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর কানপুরের কাছে লাইনচ্যুত হয়েছিল ইনদওর-পটনা এক্সপ্রেস। কমপক্ষে ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
বেলাইন বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস
২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের ময়নাগুড়িতে লাইনচ্যুত হয়েছিল বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। ৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
খুলনা গেজেট/কেডি