খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর উত্তরা থেকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কপোতাক্ষ নদে অপরিকল্পিত সেতু নির্মাণে প্রতিবাদ সমাবেশ

ঝিকরগাছা প্রতিনিধি

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছা কপোতাক্ষ নদের উপর অপরিকল্পিত সেতু নির্মাণের প্রতিবাদে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সেবা’র উদ্যোগে ঝিকরগাছার বিভিন্ন সামাজিক ও নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলো মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

রবিবার সকাল দশটায় যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছা ব্রিজ সংলগ্ন রাস্তায় কযেক শত মানুষ এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু নির্মাণে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) গেজেট না মানার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্রিজের নকশায় ত্রুটির কারণে নদ নব্যতা আরো হারাবে বলে এলাকাবাসীর দাবি।

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে ঝিকরগাছায় জাইকার অর্থায়নে ছয় লেনের সেতু নির্মাণ কাজ চলছে। যার মধ্যে একটির নির্মাণ কাজ শেষে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। খুলে দেয়া সেতুটিতে সামান্য বৃষ্টিতে গার্ডারের নিচে পানি ছুঁতে চলেছে। ফলে ভরা মৌসুমে সেতুর নিচ দিয়ে নৌযান চলাচল করতে পারবে না বলে এলাকাবাসী আশংকা করছেন।

দেশের প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোলে যাতায়াতের একমাত্র পথ যশোর-বেনাপোল এই মহাসড়ক। এটি প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়ে। এ সড়কের ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ নদের উপর অর্ধশত বছর আগে নির্মিত সরু ব্রিজটি ছিলো এ পথের বিড়ম্বনা। তাই বছর দেড়েক আগে এ ব্রিজটির পাশে শুরু হয়েছে ৬ লেনের জন্য দুইটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন দুইটি ব্রিজের মধ্যে একটির কাজ সম্প্রতি শেষ হয়ে এর পাশে শুরু হয়েছে আরেকটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ। প্রতিটি ব্রিজ ১২০ মিটার লম্বা ও ১৫ মিটার চওড়া। দুইটি করে পায়ার বা পিলার ও এবাটমেন্ট ওয়াল এবং ২১ গার্ডার বা ভিম দেয়া হয়েছে। পুরাতন ব্রিজটির চেয়ে দেড় মিটার উচু করা হয়েছে। ব্রিজটি পিসট্রেজ সমান করা হয়েছে।

জাইকার অর্থায়নে প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মনিকো এবং ডেনকো ব্রিজ দুইটি নির্মাণ করছে। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া ব্রিজটি দেখে এলাকাবাসী আশাহত হয়েছেন। পুরাতন ব্রিজের নিচ অংশ বা তলদেশ কখনো নদের পানি স্পর্শ করতে পারেনি। অথচ, বৃষ্টিতে নদে পানি সামান্য বাড়ায় নির্মাণাধীন অর্থাৎ নতুন ব্রিজের নিচের অংশ বা তলদেশকে পানি ছুঁতে চলেছে।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে এলাকাবাসী বলেন, ভরা মৌসুমে নতুন এ ব্রিজের নিচ দিয়ে কপোতাক্ষ নদে কোনো নৌকা তো দূরের কথা একটি ডুঙ্গাও চলাচল করতে পারবে না। এ ব্রিজের কারণে নদ নব্যতা আরো হারাবে। ব্রিজের নকশা ঠিক হয়নি। নদকে মেরে ফেলতে নতুন ব্রিজই যথেষ্ট একারণে নবনির্মিত এই ব্রিজটি ভেঙ্গে পুণরায় পরিকল্পিত নকশা অনুযাযী নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।

ঝিকরগাছা উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার বসু জানান, বন্যা বা প্রবল বর্ষায় ব্রিজের নিচ দিয়ে কোনো কিছু চলাচল করতে পারবে না। ব্রিজের গার্ডার উচ্চতা কম করায় এমন হয়েছে। এক্ষেত্রে নদী পুনঃখনন করতে হবে।

এদিকে গত ৩০ জুলাই নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগের পশ্চিম শাখার যুগ্ম পরিচালক আশরাফ হোসেন সরেজমিনে পরিদর্শনে এসে অভিযোগের সত্যতা তুলে ধরে বলেন, সেতুটি নির্মাণে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অনুমোদন নেয়া হয়নি। নির্মাণাধীন সেতুটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কোন গেজেটও মানা হয়নি। এক পর্যায় তিনি নদের পানি থেকে সেতুর উচ্চতা মেপে দেখেন। যেখানে সর্বনিম্ন উচ্চতা থাকার কথা ২০ ফুট সেখানে, আছে ১৫ ফুট। এসব দেখে তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!