খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৯ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  হাইকোর্টে ২৩ জনকে অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ, আজ শপথ

কপিলমুনিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কমপ্লেক্স বাস্তবায়নে সংবাদ সম্মেলন

পাইকগাছা প্রতিনিধি

সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন কপিলমুনিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণ ও যুদ্ধকালীন রাজাকার ঘাাঁটিসহ রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু প্রতিষ্ঠিত বেদমন্দির ও সকল সম্পত্তির অবৈধ দখলমুক্তর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হরিঢালী ও কপিলমুনি ইউনিয়ন কমান্ড, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ পাইকগাছা উপজেলা, কপিলমুনি ও হরিঢালী ইউনিয়ন শাখা।

বৃহস্পতিবার(১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩ টায় পাইকগাছার কপিলমুনি প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কপিলমুনি মুক্তিযোদ্ধা বহুমুখী সমবায় সমিতি লি: এর সাধারণ সম্পাদক শেখ জামাল হোসেন।

তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন রাজাকাররা কপিলমুনির প্রতিষ্ঠাতা রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুর সুরম্য দ্বিতল বাড়িটি দখল করে ঘাঁটি তৈরী করে। সেখান থেকে রাজাকাররা পর্যায়ক্রমে ১ হাজার ৬০১ জন নীরিহ মানুষকে হত্যা করে। এরপর ৯ ডিসেম্বর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দেড় শতাধিক রাজাকারকে আটক ও গণরায়ে তাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। যুদ্ধে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তথা কপিলমুনি যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা, জনগণের আত্মত্যাগ ও স্বাধীনতা বিরোধীদের কূ-কীর্তি আগামী প্রজন্মের কাছে স্মরণীয় করে রাখতে জনপদের মুক্তিযোদ্ধারা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।

বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সারাদেশে গণহত্যার স্থান, যুদ্ধ ময়দানের স্মৃতি সংরক্ষণ করছে। যার ধারাবাহিকতায় কপিলমুনি গণহত্যার স্থানে বদ্ধভূমি নির্মিত হয়েছে। ঐতিহাসিক কপিলমুনি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর কপিলমুনি মুক্তদিবসে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক কপিলমুনিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন ও পরে ২ কোটির বেশি টাকা বরাদ্দ দেন। মূলত এরপর থেকে স্মৃতি কমপ্লেক্স’র বিরোধিতা করে স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাদের নানামুখী ষড়যন্ত্রে বন্ধ হয়ে যায় এর নির্মাণ কাজ। মুখোশধারী কতিপয় রাজনীতিক, তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের উষ্কানি ও ছত্রছায়ায় স্থানীয় তপন সাধু গং কমপ্লেক্স’র নির্মাণ কাজ বন্ধ করে নির্ধারিত স্থানে রাতের আঁধারে পাকা ইমারত নির্মাণ শুরু করে। এরপর স্থানীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধাসহ সুশীল সমাজকে সাথে নিয়ে দখলদারদের সাথে বসাবসি করেও সফলতা আসেনি। এরপর সরকার দখলকৃত সম্পত্তির অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় সর্বশেষ বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) খুলনা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মারুফ উল আলমের নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে পরিদর্শণ ও অধিগ্রহণের বিষয়টি অবহিত করনে আসলে তপন সাধু গংরা বিরোধী চক্রের সদস্যদের সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হৈ হট্টগোল শুরু করে। এসময় তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে অশোভন আচারণ এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উপস্থিত জনতা তাদের প্রতিহত করতে চেষ্টা করেন বলেও জানান তিনি।

তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, এরপরও দখলদাররা থেমে নেই তারা অশুভ শক্তির ইন্ধনে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে উল্লেখ করে ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন, সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন ও রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুর সকল স্থাপনা অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

প্রসঙ্গত, কপিলমুনিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণে গত ৯ ডিসেম্বর ২০’ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এসময় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব তপন কান্তি ঘোষ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ইউসুফ হারুন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবুসহ মুক্তিযোদ্ধা, সুশীল সমাজের নের্তৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ বাঁধার মুখে সরকার কমপ্লেক্স’র নির্ধারিত স্থানে সাড়ে ১১ শতক জমির অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে দখলদার নানামুখী অপতৎপরতায় নতুন করে নানা আশংকা জেঁকে বসেছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!