খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ইউক্রেনে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা রাশিয়ার
  কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু, কিশোরগঞ্জে ৩ জন
  সারা দেশে হয়রানিমূলক ও মিথ্যা মামলা হচ্ছে, যা ঠিক নয়: আইন উপদেষ্টা
  ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করে পিএসসির প্রজ্ঞাপন

কপিলমুনিতে মহা বারুণী স্নান : করোনায় নেই মেলার আ‌য়োজন

কপিলমুনি প্রতিনিধি

করোনা মহামারীতে কোন প্রকার মেলা, রকমারি পণ্যের দোকান পাট ছাড়াই কপিলমুনিতে ঐতিহ্যবাহী মহা বারুণী স্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে। মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথি ধরে শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে কপিলমুনি কালীবাড়ী ঘাটে কপোতাক্ষ নদীতে স্নানের মধ্য দিয়ে চারশত বছরেরও বেশি সময়ের ঐতিহ্যবাহী মহা বারুণী স্নান অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতি বছর চৈত্র মাসের মধূকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কপিলমুনি কালী বাড়ি ঘাটে পালন করেন বারুণীর স্নান উৎসব। করোনা মহামারীতে কোন প্রকার মেলার আয়োজন ছাড়াই শুধুমাত্র স্নানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে বারুণী স্নান।

বারুণী স্নান’র ইতিহাস থেকে জানা গেছে, কোন এক চৈত্র মাসের মধুকৃৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে মহামুনি কপিলদেব কপিলমুনির কপোতাক্ষ ঘাটে সিদ্ধি লাভ করেন। তাঁর সিদ্ধি লাভের স্থানে মা গঙ্গার সাক্ষাত লাভ করেন। এ কারণে তাঁর সিদ্ধি লাভের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সেই স্মরণাতীত কাল থেকে ধর্ম প্রাণ হিন্দু ভক্তরা কপোতাক্ষ নদের কালীবাড়ী ঘাটে গঙ্গা স্নান বা বারুণী স্নান উৎসব পালন করে আসছেন। প্রবাদে আছে, মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে গঙ্গার জল এই স্থানে প্রবাহিত হয়। বরুণ জলের দেবতা, বরুণের স্ত্রী বারুণী, বারুণী আর এক অর্থে গঙ্গা। তাই বারুণী স্নান মানেই গঙ্গা স্নান।

এছাড়াও স্নানোৎসবকে ঘিরে কপিলমুনিতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বারুণী মেলা। মেলা উপলক্ষে এক সময় যাত্রা, সার্কাস, পুতুল নাচ, নাগর দোলা, মৃত্যুকূপসহ চিত্ত বিনোদনের নানা পসরার সাথে বসত বিভিন্ন খেলনা, কাঠের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় নানা পসরায় সাজানো মেলা। তবে কয়েক বছর আগে থেকে স্থানীয়দের সমন্বয়হীনতা ও রাজনৈতিক অস্থীরতা, জায়গার অভাবসহ নানা সংকটে দীর্ঘ দিন কপিলমুনিতে বন্ধ রয়েছে ঐতিহ্যবাহী মহা বারুণী মেলা। বারুণী মেলা চলত এক সপ্তাহ থেকে শুরু করে পক্ষ কাল কিংবা ২০/২৫ দিন বা ১ মাস পর্যন্ত। বারুণী স্নান সনাতনীরা করলেও বাঙালি সংষ্কৃতির সাথে মিলে-মিশে মেলা উদযাপন করতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জনপদের সকল ধর্ম বর্ণের মানুষরা। তবে বেশ ক’বছর ধরে মেলা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী বারুণী মেলা।

এ ব্যাপারে কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কওছার আলী জোয়াদ্দার জানান, করোনা মহামারীর মধ্যে সরকারি নির্দেশনা মেনেই সকাল ৭টা থেকে কপিলমুনির কপোতাক্ষ কালীবাড়ী ঘাটে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শুধুমাত্র বারুণী স্নান উৎসব পালন করেছেন। এ সময় তিনি কালীবাড়ী ঘাটে পুণ্যার্থীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারী পরবর্তী আগামী বছর থেকে ঐতিহ্যবাহী মেলাটিকে পূর্বের ন্যায় ফিরিয়ে আনতে সনাতন ধর্মাবলম্বী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!