ঘড়ির কাটা রাত ৮ টা ছুইছুই। জনমানব শূন্য খুলনা নগরীর প্রায় প্রতিটি সড়ক ও মহাসড়ক। সাতরাস্তা থেকে শিববাড়ি মোড়, ব্যস্ততম সড়ক বলে সকলের কাছে সমধিক পরিচিত। স্বাভাবিক সময়ে দু’পাশের দোকানে ঝলমলে আলোর উপস্থিত থাকলেও আজ দু’দিন ধরে ভিন্ন চিত্র। রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি একেবারে নেই বললেই চলে। শুধু টুংটাং শব্দ করে মাঝে মধ্যে শিববাড়ি-সাতরাস্তা মোড় সড়ক ধরে দু’একটি রিকসা চলে যাচ্ছে।
চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এ সময়ে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ব্যাপকভাবে বেড়ে চলেছে। জুন মাসের ২২ তারিখে জেলা প্রশাসন খুলনা মহনগরের তিনটি থানা ও রূপসা উপজেলাকে লকডাউনের আওতায় আনে। জারি করা হয় কতিপয় বিধি-নিষেধ। এরপরও মানুষ উপেক্ষা করে। বাড়তে থাকে সংক্রমণের সংখ্যা। খুলনাসহ সারাদেশের অবস্থা অবনতি হওয়ার কারণে সরকার বাধ্য হয়ে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেয়। মাঠে নামানো হয় সেনাবাহিনী, বিজিবি, এপিবিএন ও র্যা ব। অযৌক্তিক কারণ ছাড়া বাইরে বের হলেই গুনতে হচ্ছে জরিমানা।
প্রায় নির্জন-নিস্তব্ধ এ রাস্তায় রিকসার এই শব্দই যেন আতঙ্ক ধরিয়ে দেয় ! এটি শুধু সাতরাস্তা মোড় থেকে শিববাড়ি পর্যন্ত নয়, বরং নগরীর প্রায় প্রতিটি ব্যস্ততম এলাকায় সন্ধ্যার পর থেকে এমন দৃশ্য। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার সারাদেশকে কঠোর লকডাউনের আওতায় আনে।
নগরীর সাতরাস্তা মোড় বাংলাদেশ ব্যাংক স্টাফ কোয়ার্টারের বাসিন্দা নুর মোহাম্মাদ জানান, এ রকম পরিবেশ খুব ভালো। আবার এর খারাপ দিকও রয়েছে। এ সময়ে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে নগরীতে অধিক পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। না হলে শহরে চুরি ডাকাতি বেড়ে যাবে।
ময়লাপোতা ইকবাল নগর মসজিদ লেনের বাসিন্দা হাফিজ উদ্দিনের ভাষ্য, করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারের এটি ভাল পদক্ষেপ। যা আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল। তাহলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতো না। নগরীর এ নিস্তব্ধতা কাটাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করার জন্য তিনি আহবান জানান।