খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৭ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  বিএনপি কর্মী খুনের মামলায় সাবের হোসেন ৫ দিনের রিমান্ডে
  সামিট গ্রুপের আজিজসহ পরিবারের ১১ সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
  সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার

কঠোর বিধিনিষেধে সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষিত (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদক

লকডাউনের ২৬ তম দিন আজ। সময় বাড়ার সাথে সাথে বিধি নিষেধ ভুলতে বসেছে সাধারণ মানুষ। প্রশাসনের তৎপরতা আগের চেয়ে কম। লকডাউনকে কেন্দ্র করে জারি করা প্রজ্ঞাপনের অধিকাংশ নির্দেশনাই থাকছে উপেক্ষিত।

করোনা সংক্রমণ রোধে ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সরকার ১৩টি নির্দেশনা প্রদান করে। কাচাঁবাজার, মার্কেট, দোকানপাট, মসজিদ, গণপরিবহন সম্পর্কিত প্রতিটি নির্দেশনা অমান্য করা হচ্ছে। সব জায়গায় বাড়ছে জনসমাগম, বাড়ছে সংক্রমনের আশঙ্কা।

কঠোর বিধিনিষেধ চলাকালে যে যেখানে আছে সেখানেই অবস্থান করার জন্য খোদ প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ জানালেও গত তিন দিন মহাসড়ক ও ফেরিঘাটের চিত্র তার উল্টো। শুধু স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা নয়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে যেভাবে পারছে ঈদ করতে বাড়ি ছুটছে।

কাঁচাবাজারের ক্ষেত্রে সকাল ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে উন্মুক্ত স্থানে ক্রয় বিক্রয়ের নির্দেশনা ছিলো। গত বছরের লকডাউনে উন্মুক্ত স্থানে হাট-বাজার বাস্তবায়ন হলেও এবারে সম্ভব হয়নি। নগরীর রূপসা সন্ধ্যা বাজার, নতুন বাজার, নিউমার্কেটের কাঁচাবাজার, সোনাডাঙ্গা পাইকারি আড়ত, নিরালা কাঁচাবাজার, ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার পূর্বের নিয়মেই স্ব স্ব স্থানে বেচাকেনা করছে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিংমল ও দোকানপাটগুলোতে বেচা-কেনা করার কথা থাকলেও ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ মানছে না সেসব। নগরীর ডাকবাংলো মোড়ের কাপড়ের দোকান, জুতার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। রেলওয়ে মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, জলিল টাওয়ার, নান্নু সুপার মার্কেটেসহ প্রতিটি মার্কেটে মানুষের গাদাগাদি অবস্থা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের মুখে মাস্ক থাকলেও গাদাগাদি ভিড়ে সামাজিক দুরত্বের বালাই নেই।

অধিকাংশ দোকানে হ্যান্ডসেনিটাইজার বা টেম্পারেচার মেশিনের ব্যবস্থা নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মাইকিং করা ছাড়া আর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি মার্কেট কর্তৃপক্ষ। গত বছরে খুলনা শপিং কমপ্লেক্সের প্রবেশমুখে জীবানুমুক্ত টার্নেলের ব্যবস্থা থাকলেও এবার তা করা হয়নি। তবে ভিন্ন পরিবেশ ছিলো নিউমার্কেট এলাকায়, অনেকটা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলছে বেচাকেনা।

স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জুমা ও তারাবির বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকলেও অনেকাংশেই বাস্তবায়ন নেই। প্রতিদিন এশার ওয়াক্তে তারাবির নামাজকে কেন্দ্রকরে মুসল্লিদের ভিড় থাকে। গত শুক্রবারে জামে মসজিদগুলোতে মানুষের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মত।

নগরীতে ইজিবাইক, মাহিন্দ্রা, রিক্সাগুলো স্বাভাবিক সময়ের মতই যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। গায়ে গায়ে বসিয়ে সিটপূর্ণ করে যাত্রী নিলেও ভাড়া নিচ্ছে দ্বিগুণ।

এদিকে শহরে প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ নদীপথ রূপসা ঘাট ও জেলখানা ঘাটের চিত্র ভিন্ন ভিন্ন। জেলখানা ঘাটের প্রতিটি ট্রলারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ১৩ জন যাত্রী নিয়ে পারাপার করছে। অন্যদিকে রূপসা ঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও ১৫-২০ জন যাত্রী নিয়ে ট্রলার পারাপার চলছে। একের পর এক যাত্রী নিয়ে ট্রলার ছাড়ায় অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ভিড় লেগে থাকছে রূপসা ঘাটে।

অন্যদিকে ৬ মে থেকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আন্তঃজেলা বাস চলাচল শুরু হয়েছে। শহরের রূপসা বাস টার্মিনাল থেকে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে রায়েন্দার রুটে বাস চলছে। এছাড়া সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে কয়েকটি রুটে আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে পরিবহন চলছে। তবে লকডাউনে গণপরিবহনে বিধি নিষেধের সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে ছোট পরিবহণগুলো। বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, মাওয়া, সাতক্ষীরা রুটে চলাচল করছে মাহিন্দ্রা, ইজিবাইক ও মাইক্রো। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গাদাগাদি করে মহাসড়কে যাত্রী পরিবহন করছে যানবাহনগুলো।

কঠোর লকডাউনের প্রথম কিছুদিন শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ছিলো ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম। মাস্ক, স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে সাধারণ মানুষ ছিলো সচেতন। তবে এখন প্রশাসনের সে তৎপরতা অনেকটাই শিথিল। মার্কেটগুলোর গাদাগাদি ভিড় সমাধানেও কার্যকরি কোনো পদক্ষেপ নেই।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!