ভাদ্র মাস এলেই মানুষের মাঝে উচ্ছ্বাস জানান দেয় বলুহ মেলা সন্নিকটে। কাঙ্খিত সেই মেলা শুরু হওয়ার সময় এখনও দেরি আছে। তারপরও দেশের বিভিন্ন জেলা হতে ব্যবসায়ীরা আসতে শুরু করেছেন। বসে নেই স্থানীয় ফার্নিচারসহ অন্য ব্যবসায়িরাও। করোনা মহামারীর দুই বছর পর মেলা হবে তাই সকলের মাঝেই বয়ে চলেছে আনন্দের বন্যা।
যুগের পর যুগ ধরে বাংলা সনের ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয় চৌগাছার ঐতিহ্যবাহী বলুহ মেলা। উপজেলা সদর হতে মাত্র ৩ কিলোমিটার উত্তরে হাজরাখানা গ্রামে বসে দেশের অন্যতম বৃহৎ এই মেলা। করোনার কারণে গত দুই বছর মেলা বসার অনুমতি ছিল না। এ বছর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় মেলা অনুষ্ঠিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ঠরা। মেলাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলা হতে মৌসুমী ব্যবসায়ী তাদের পণ্য সামগ্রী নিয়ে চৌগাছায় হাজির হয়েছেন। এরমধ্যে শিশু খেলনা উল্লেযোগ্য।
সোম, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার চৌগাছা বাজারের বিভিন্ন মোড়ে অন্তত ১০ ব্যক্তিতে গ্যাস বেলুনসহ নানা ধরনের খেলনা বিক্রি করতে দেখা গেছে। এই ব্যবসায়ীদের বেশির ভাগই নওগাঁ, বগুড়া, ফেনী, জয়পুরহাট জেলা ও উপজেলা হতে চৌগাছায় এসেছেন।
কথা হয়, বগুড়া জেলার জিয়ানগর এলাকার সাদ্দাম হোসেন, জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর এলাকার সজিব হোসেন, বগুড়ার রুপচাচিয়া এলাকার নুরনবি ও একই এলাকার হৃদয় হোসেনের সাথে। তারা বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ হলো বলুহ মেলা উপলক্ষে তারা হরেক রকমের শিশু খেলনা নিয়ে চৌগাছায় এসেছেন। বাজারে একটি ঘর ভাড়া করে সেখানে থাকেন। যেহেতু মেলা বসতে এখনো বেশ দেরি তাই মেইন বাজারেই তারা এসব খেলনা বিক্রি শুরু করেছেন। মূল মেলা শুরু হলেই সকলেই সেখানে চলে যাবেন।
চৌগাছা বাজারের ফর্নিচার ব্যবসায়ি নিমাই সরকার, আব্দুল গনি, মোশারফ হোসেন বলেন, গত দুই বছর মেলা না হওয়ায় আমরা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত। এবছর মেলা হবে সেই আশায় ফার্নিচার তৈরি করছি। আশা করছি মেলাতে ভাল ব্যবসা হবে।
ঐতিহ্যবাহী বলুহ মেলা যেখানে বসে, সেই মেলার অধিকাংশ জায়গা হচ্ছে ব্যক্তি মালিকানা জমি। এ সব জমির মালিক হেলাল উদ্দিন, হবিবর রহমান, মিয়াজান আলী, মিজানুর রহমানসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, বলুহ মেলা হচ্ছে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতীক। বিগত দুটি বছর মেলা বসেনি, এবছর মেলা বসবে বলে আমরা আশা করে আছি।
মেলা আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য বিএম বাবুল আক্তার, সংশ্লিষ্ট গ্রামের ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মিলন বলেন,বলুহ মেলার সময় হলে কাউকে খবর দিতে হয় না। নিজে থেকেই মানুষ এখানে চলে আসেন। এবছর বেশ আগে ভাগেই ব্যবসায়িরা আসতে শুরু করেছেন। প্রাণের এই মেলা বসতে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না হয় সে জন্য আমরা গ্রামবাসী সকলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করছি, প্রশাসনের সাথেও আমাদের আলোচনা চলছে। যেহেতু গত দুই বছর করোনার কারণে মেলা হয়নি, এ বছর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে তাই মেলা বসতে কোনো সমস্যা হবে না বলে আমরা আশা করছি।