গণতন্ত্র ও জনগণের মুক্তির সকল সংগ্রামের অগ্রসেনানী ছিলেন দাদু ভাই। দৃঢ়তা, অটুট মনোবল, সাহস, ধৈর্য্য এবং ব্যক্তিত্বে তিনি ছিলেন অনন্য উচ্চতার একজন ব্যতিক্রমী রাজনীতিবিদ। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীকার আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামে তিনি অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। ভাষা আন্দোলনের পক্ষে জনমত সৃষ্টিতে ৬৪ বছর আগে যারা খুলনায় মিছিল সমাবেশ-এর আয়োজন করতেন তাদের একজন এম নুরুল ইসলাম। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত খুলনার রাজপথে উপস্থিতি ছিল সার্বক্ষনিক।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) খুলনার বর্ষিয়ান রাজনীতিক, ভাষা সৈনিক, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এম নুরুল ইসলাম দাদুভাই স্মৃতি পরিষদ অয়োজিত স্মৃতিচারণে বক্তরা এসব কথা বলেন।
বেলা ১২টায় টুটপাড়া কবরখানায় তাঁর কবর জিয়ারত এবং মরহুমের বাসভবনে তার স্ত্রী লায়লা ইসলাম, ছেলে প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম লুনিক, তরিকুল ইসলাম লুতাম, মনিরুল ইসলাম মনি, মেয়ে সাহানা পারভিন, সাবেরা ইসলাম ও তাহেরা ইসলাম এর সঙ্গে সাক্ষাত করেন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
বাদ জুমা পিটিআই জামে মসজিদে দোয়া অনুষ্ঠানের পর নেতৃবৃন্দরা আরও বলেন, সেদিন তিনি ছিলেন টগবগে যুবক। ঢাকার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে খুলনা ভাষা আন্দোলন গড়ে তুলতে সেদিন হাতে গোনা কয়েকজন যুবক শ্রম ও মেধা নিয়োগ করেন। ঢাকার অনুরূপ খুলনায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি হরতাল পালিত হয়। হরতাল সফল করতে যারা এগিয়ে আসেন তাদের মধ্যে তিনি একজন। ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ছাত্রদের মিছিলে গুলিবর্ষণ ও ছাত্র নিহত হওয়ার প্রতিবাদে খুলনার যুব সমাজ ২৩ ফেব্রুয়ারি মিছিল বের করে। তিনি রাজনৈতিক অঙ্গনে দাদু ভাই বলে পরিচিত।
তিনি ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন জাগদলে যোগ দেন। ১৯৭৯ সালে খুলনা মহানগরী বিএনপি’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দীর্ঘ সময় এই দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৭৯ সালে বিএনপির মনোনয়নে খুলনা সদর আসন থেকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। ২০০১ সালে চারদলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে খুলনা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনি, এম নুরুল ইসলাম দাদুভাই স্মৃতি পরিষদের আহবায়ক এডভোকেট বজলুর রহমান, সদস্য সচিব শেখ মোশাররফ হোসেন, জাফর উল্লাহ খান সাচ্চু, এড. লতিফুর রহমান লাবু, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, শেখ আব্দুর রশিদ, সিরাজুল হক নান্নু, সিরাজ উদ্দিন সেন্টু, নজরুল ইসলাম বাবু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মহিবুজ্জামান কচি, ইকবাল হোসেন খোকন, সাদিকুর রহমান সবুজ, আনোয়ার হোসেন, ইউসুফ হারুন মজনু, আবুল কালাম শিকদার, শেখ জামিরুল ইসলাম জামিল, ইশহাক তালুকদার, শাহাবুদ্দিন মন্টু, রিয়াজুর রহমান, মাহবুব হোসেন, রবিউল ইসলাম রবি, মহিউদ্দিন টারজান, মেজবাহ উদ্দিন মিজু, শরিফুল ইসলাম বাবু, কাজী ফজলুল কবির টিটো, নুরুল ইসলাম লিটন, মাওলানা আব্দুল গফ্ফার, এড. রফিকুল ইসলাম, নুরে আব্দুল্লাহ, সাকিল আহমেদ প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/ টি আই