দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর ‘পাগলা ঘোড়া’ যেভাবে ছুটছে তা কোথায় গিয়ে থামবে তা কেউ বলতে পারছে না। যদিও বিশেষজ্ঞরা আগেই জানিয়ে দিয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হলেও আগামী কিছুদিনের মধ্যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আর নতুন করে ৮ হাজার ৬৬১ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তের হার ২৮.৯৯ শতাংশ। কোভিডে দৈনিক মৃত্যু ও আক্রান্তের হারে এটিই সর্বোচ্চ রেকর্ড।
এর আগে গত সোমবার কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৪৩ জন, যা ছিল আজকের আগ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ নিয়ে আজকে পর্যন্ত করোনাভাইরাসে পরপর সাত দিন একশো’র বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো। এর মধ্য দিয়ে দেশে নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে।
সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন খুলনায় ৫১ জন। এরপরই ঢাকায় ৪৬, রাজশাহীতে ১২ এবং চট্টগ্রামে ১৫ জন মারা গেছেন। এর আগের দিনেও সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল খুলনায়।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৯১৭ জন শনাক্ত হয়েছেন। কয়েকদিন ধরেই রোগী শনাক্তের হার ২৫ শতাংশের উপরে থাকছে।
এদিকে সারাদেশে অক্সিজেন সরবরাহের কোনো সংকট নেই বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তারা জানিয়েছে, দেশে প্রতিদিন যে পরিমাণ অক্সিজেনের চাহিদা রয়েছে, তার চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়। কিন্তু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে সেটি আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে ।
এর আগে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি জেলায়, বিশেষ করে সাতক্ষীরা, খুলনা এবং বগুড়ায় করোনাভাইরাসের রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েও অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছে বলে জানিয়েছেন রোগীর আত্মীয়-স্বজন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে অধিকাংশই সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে। ঈদের পর থেকে ভারতের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে দ্রুত রোগী বাড়তে থাকে। যা এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
দেশে এখন সংক্রমণের ৮০ শতাংশই ডেল্টা ভ্যারিয়্যান্ট (ভারতীয়) বলে সরকারের একটি গবেষণায় জানা গেছে। এমন প্রেক্ষাপটে গত সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য দেশে কঠোর লকডাউন চলছে। যা আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে এসংক্রান্ত জাতীয় কমিটি।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি