খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  মহাখালীতে সড়ক-রেললাইন অবরোধ শিক্ষার্থীদের, সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ

এখনও বাজে ৩৫ বছর আগের টেপে হারানো দিনের গান

মহিদুল ইসলাম, চৌগাছা

চৌগাছা-কোটচাঁদপুর সড়কে উপজেলা পরিষদের পাশে টিন সেটের ছোট্ট চায়ের দোকান। সারা দিন চায়ের কাপে চামিচের ঠনঠন শব্দ দোকান মালিক শাহাজান আলীর কাছে মিষ্টি মধুর। তার থেকে বেশি মধুর হারানো দিনের গান। ৩৫ বছর আগে কেনা টেপ রেকর্ডারে ফিতের গান বাজে মৃদু সুরে। গান শুনে মুগ্ধ চা পানকারীরাও। সারা দিন চা বিক্রি করে যা রোজগার হয় তাতেই খুশি দোকান মালিক শাহাজান।

শাহাজান আলী চৌগাছাবাসির কাছে অত্যান্ত পরিচিত একটি মুখ। আশির দশক থেকে তিনি ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করার কারনে শহর ও শহরতলীর মানুষের কাছে পরিচিত। এখন বয়স হয়েছে, তাই সে ভাবে কাজ করতে পারেন না, তাই নিজ বসতবাড়ির সামনের অংশে টিন সেটের ছোট্ট একটি দোকান তৈরী করে চা বিক্রি করেন। শাহাজান আলী একজন সংগীতমনা ব্যক্তি। যখন তিনি গ্রাম থেকে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতের কাজে ছুটেছেন তখন সাথে থাকত রেডিও। গানে গানে করেছেন কাজ, পার করেছেন দিন। রেডিও যুগ শেষ, এরপর আসে টেপ রেকর্ডার আর ফিতায় গান। ৩৫ বছর আগের কথা, রোজগারের টাকা দিয়ে ৫ হাজার টাকায় ক্রয় করে একটি টেপ রেকর্ডার। নিজ দেশের পছন্দের শিল্পির ক্যাসেট সংগ্রহের পাশাপাশি ভারতের সেরা শিল্পিদের ক্যাসেট কিনে অবসরে গান শুনে সময় কাটায়। বর্তমানে চায়ের দোকানে ২১ ইঞ্চি রঙিন টেলিভিশন আছে, ক্রেতারা টেলিভিশন দেখছেন, কিন্তু দোকান মালিক তার সেই ক্যাসেটে মৃদু সুরে দেশ বিদেশের সেরা শিল্পিদের হারানো দিনের গান শুনছেন, এরমধ্যে চা, পান তৈরী করছেন তুলে দিচ্ছেন ক্রেতাদের হাতে।

কথা হয় সংগীত প্রেমী শাহাজন আলীর সাথে। তিনি জানান, দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কিছুটা স্বচ্ছলতার সাথে বেঁচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে পথচলা। কাড়িকাড়ি টাকা, গাড়ি বাড়ি করতে হবে এমন নেশা ছিল না, তাই হয়ত সে সব হয়নি। কাজ করে যা আয় করেছি তা দিয়ে চলেছে সংসার। তিন ছেলেকে সে ভাবে শিক্ষিত করতে পারেনি, তবে তাদেরকে মানুষ করেছি, ছেলেরা এখন যে যার পেশায় যুক্ত। মানুষ বলে গানে জ্ঞান আমি তেমনটি মনে করি না, তবে গানকে আমি ভালবাসি। তাই ছোট বেলা থেকেই গান গাইতে না পারলেও শুনতে বেশ পছন্দ করি। রেডিও’র জগত শেষ এরপর এলো ক্যাসেটের জগত। রেডিও ছেড়ে টেপ রেকর্ডার ক্রয় করি। ৩৫ বছর আগে কেনা টেপ রেকর্ডার অতি যতেœ রেখেছি, আছে দেশ বিদেশের নামকরা শিল্পিদের অন্তত অর্ধশত ক্যাসেট। দোকানে আসা ব্যক্তিরা টেলিভিশন দেখে, কিন্তু আমি চা তৈরী করি আর টেপ রেকর্ডারে হারানো দিনের গান শুনি, বেশ ভাল লাগে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!