বয়স হয়েছে তাই এখন আর কাজ করতে মন চাই না। কিন্তু কী করব? বসতভিটা ছাড়া কোনো জমিও নেই। তাই অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা উপার্জন করি তা দিয়েই কোনোরকম সংসার চালাই।’কাজে না গেলে স্ত্রী-সন্তান না খেয়ে থাকবে। আল্লাহ আমায় ১ছেলে – ১মেয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে আবার ৪জন কথা বলতে পারে না। সন্তান মা-বাবার কাছে আদরের তাই কষ্ট করে হলেও কোনোরকম দুইবেলা খাওয়াইতে হয়।
হৃদয়বিদারক কথাগুলো বলছিলেন খুলনার ফুলতলা উপজেলার আটরা গিলাতলা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের গিলাতলা মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত ফারুক কাজীর পুত্র দিনমজুর আজগার কাজী (৬৫)। স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ৫জনের সংসার আজগার কাজীর। এর মধ্যে ২ ছেলে মেয়ে জন্মগত প্রতিবন্ধী। বড় ছেলে কাজী কামাল হোসেন (৩০) প্রতিবন্ধী। সংসার চালাতে বাবার কষ্ট হয়। তাই বাড়ির সাথে ছোট চায়ের দোকান দিয়েছেন। মেয়ে সাথি প্রতিবন্ধী। অনার্স সেকেন্ড ইয়ার পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন আর্থিক অভাবে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে খুবই কষ্টে জীবন যাপন করছে পরিবারটি।
গিলাতলা মধ্যপাড়া গ্রামের আবুল মিয়ার বাড়িতে গেলে তার প্রতিবন্ধী স্ত্রী আছিয়া বেগম বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের ২ ছেলেমেয়েকে প্রতিবন্ধী দিয়েছে। আমি এবং আমার আর এক বোনের এক অবস্থা।
প্রতিবেশী স্থানীয় বাসিন্দা মইদুল বলেন, প্রতিবন্ধী হলেও কামাল দাবা খেলোযাড় হিসেবে তার বেশ নাম রয়েছে। ভবিষ্যতে সরকারি সহয়তার মাধ্যমে কামাল যেন একজন জাতীয় পর্যায়ের দাবা খেলোয়াড় হতে পাড়ে সে ব্যাপারে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সরকারের উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
কামাল এর মা বলেন, মেয়েটি প্রতিবন্ধী হয়েও অনেক কষ্ট করে তাকে অনার্স সেকেন্ড ইয়ার পর্যন্ত পড়াশোনা করিয়েছে। সরকারের যে প্রতিবন্ধী কোটা রয়েছে তার মাধ্যমে যদি আমার মেয়েকে একটি সরকারি চাকরি দেওয়া হয় তাহলে কিছুটা হলেও আমাদের সংসারে সচ্ছলতা ফিরে আসবে।
খুলনা জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খান মোতাহার হোসেন বলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে তথা সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কিভাবে এ পরিবারটির পাশে দাড়ানো যায় তার উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
খুলনা গেজেট/ এএজে