খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ আষাঢ়, ১৪৩১ | ১৭ জুন, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত ঈদের ছুটির পর : দুদক আইনজীবী
  সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এলেও কথা বলছে না সরকার : ফখরুল

উপজেলা নির্বাচনে তেরখাদার চমক আবুল হাসান মুসাল্লী

একরামুল হোসেন লিপু

সদ্য সমাপ্ত তেরখাদা উপজেলা নির্বাচনে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি আবুল হাসান মুসাল্লী প্রথমবারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন দুইবার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান, তেরখাদা উপজেলার রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে ব্যাপক পরিচিত মুখ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু। উপজেলার সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে হেভিওয়েট প্রার্থী বাচ্চুকে পরাজিত করে আবুল হাসানের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া।

এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, আবুল হাসান মুসাল্লী ইতিপূর্বে তেরখাদা উপজেলার রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক অঙ্গনে আলোচিত ব্যক্তি ছিলেন না। তার জন্ম তেরখাদা ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামে। শৈশব এবং কৈশোর কেটেছে এ গ্রামেই। প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতি। ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু ঢাকাতেই। এমনকি তেরখাদা উপজেলার রাজনীতিতে ইতিপূর্বে কখনও সক্রিয় ছিলেন না। দলীয় পদ আছে জেলা মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে এলাকায় এসে জনসম্পৃক্ততা এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগ বাড়াতে থাকেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদীর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। সদালপি এবং ব্যক্তিগত আচার ব্যবহার ভালো হওয়ার কারণে স্বল্প সময়ের মধ্যেই এলাকার মানুষের কাছে বেশ পরিচিত হয়ে ওঠেন। বিশেষ করে এলাকার যুব সম্প্রদায়ের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যের আশীর্বাদ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

দীর্ঘদিন ধরে তেরখাদা উপজেলাবাসী একজন ভালো প্রার্থী খুঁজতেছিলেন। আবুল হাসান মুসাল্লী তাদের মনঃপুত হওয়ায় তাঁকে সাদরে গ্রহণ করে। নির্বাচনের পূর্বে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নানা কর্মকাণ্ড আলোচিত হতে থাকে। ক্রমান্বয়ে হাসান মুসাল্লীর ভোটের পাল্লা ভারী হতে থাকে। এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ শহিদুল ইসলামের আশীর্বাদও ছিলো আবুল হাসান মুসল্লীর প্রতি।

এছাড়া তার আধুনিক স্মার্ট ও দুর্নীতিমুক্ত মডেল তেরখাদা উপজেলা গড়ার কনসেপ্ট নতুন ভোটাররা গ্রহণ করে। সবকিছু মিলিয়ে বিজয়কে ত্বরান্বিত করে।

২১ মে ২য় ধাপে অনুষ্ঠিত খুলনার তিন উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার এটিএম শামীম মাহমুদ স্বাক্ষরিত প্রাথমিক বেসরকারি ফলাফল থেকে জানা যায়, আবুল হাসান মুসাল্লী তার একমাত্র শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চুর চেয়ে ৫ হাজার ৪৪১ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হন। আনারস প্রতীকে তার প্রাপ্ত ভোট ২৮ হাজার ১৭৯। সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চুর দোয়াত কলম প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট ২২ হাজার ৭৩৮। এছাড়া নির্বাচনে ভাই চেয়ারম্যান পদে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হয়ে চমক দেখিয়েছেন এস এম ওবায়দুল্লাহ। তিনি উড়োজাহাজ প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১৮ হাজার ৫৮৩। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ মোঃ আনিছুল হক তালা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১২ হাজার ২০৩। বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শারাফত হোসেন মুক্তি টিউবওয়ের প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৮ হাজার ৫৪৮। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাঁস-প্রতীকে ১৪ হাজার ৭৭৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন শামীমা আক্তার। তার রিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পদ্মফুল প্রতীকে পাখী রানী বিশ্বাস ভোট পেয়েছেন ১১ হাজার ৬৮৩।

তেরখাদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, নিঃসন্দেহে আবুল হাসান মুসাল্লী একজন ভালো মানুষ। নির্বাচনে এলাকাবাসী তাকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছে। এ কারণ সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার আনারস প্রতীকে সিল মেরে তাকে বিজয়ী করেছে।
তেরখাদা সদর ৫ নং ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান মানু বলেন, আবুল হাসান মুসল্লীর ব্যক্তিগত ব্যবহার এবং তার আচার আচরণ খুবই ভালো। নির্বাচনে তার আনারস প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার উঠেছিলো। এ কারণে সবাই তাকে ভোট দিয়েছে এবং বিজয়ী হয়েছেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!